নড়াইলে পুলিশ কর্মকর্তা স্বামীর বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা স্ত্রীর

১ সপ্তাহে আগে
নড়াইলে নারী নির্যাতন ও যৌতুক দাবির অভিযোগে কালিয়া থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. হাসানুল কবিরের বিরুদ্ধে আমলী আদালতে নালিশি দরখাস্ত দিয়েছেন স্ত্রী সাদিয়া কানিজ সিদ্দিকা বৃষ্টি। তবেএই পুলিশ কর্মকর্তার দাবি, মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছেন তার স্ত্রী।

রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে সাদিয়া কানিজ সিদ্দিকা বৃষ্টির জবানবন্দি শেষে নালিশি দরখাস্তটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ হাসান। আগামী ১ জানুয়ারির মধ্যে পিবিআইকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দেয়া হয়েছে।

 

নালিশি দরখাস্তে বৃষ্টি অভিযোগ করেন, গত ১৯ অক্টোবর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কালিয়া পৌরসভার রেস্ট হাউসের তৃতীয় তলার একটি গেস্ট রুমে তিনি ও তার কন্যা অবস্থান করছিলেন। ওই সময় ওই রেস্ট হাউসে তার বাবা ও খালুও ছিলেন। তাদের সামনেই ২৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে তাকে নির্মমভাবে শারীরিক নির্যাতন করেন পুলিশ কর্মকর্তা স্বামী হাসানুল কবির। সে সময় তার বাবা ও খালু তাকে ঠেকানোর চেষ্টা করেন।

 

আরও বলা হয়, ২০০৮ সালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর থানায় উপপরিদর্শক (এসআই) হিসাবে কর্মরত ছিলেন বগুড়া জেলার সন্তান মো. হাসানুল কবির। ওই বছরের ৬ এপ্রিল দুই লাখ টাকা দেনমোহরে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তখন হাসানের দাবি অনুযায়ী বৃষ্টির বাবা পাঁচ বিঘা জমি বিক্রি করে যৌতুক হিসেবে নগদ অর্থ ও উপঢৌকন প্রদান করেন। দাম্পত্য জীবনে তাদের দুই কন্যা সন্তান রয়েছে।

 

আরও পড়ুন: খুলনায় বাড়িতে ঢুকে যুবককে গুলি করে হত্যা

 

অভিযোগে বলা হয়, হাসানুল কবির র‌্যাবে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে এক নারীর সাথে পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টির প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে নিয়মিত শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতেন তিনি। প্রায় ছয় মাস আগে একটি প্রাইভেটকার কেনার কথা বলে ২৫ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন হাসান। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নির্যাতন আরও বেড়ে যায়।

 

চলতি বছরে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কালিয়া থানায় যোগদানের পর গত ২৭ সেপ্টেম্বর বৃষ্টি তার দুই কন্যাকে নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে কালিয়াতে চলে আসেন। সেদিন পৌরসভার গেস্ট হাউসে যৌতুকের দাবিতে বৃষ্টিকে মারধর করেন হাসান। পরের মাসের ১৯ অক্টোবর আবারও মারধর করেন। এ সব অভিযোগে থানায় প্রতিকার না পেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন বৃষ্টি।

 

সাদিয়া কানিজ সিদ্দিকা বৃষ্টি সময় সংবাদকে মুঠোফোনে বলেন, আমার দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামীর সম্মান আর সন্তানদের কথা ভেবে সব নির্যাতন মুখ বুজে সহ্য করেছি। সব অপরাধ মাফ করেও সংসার করার চেষ্টা করেছি। গত এক বছর ধরে সন্তানদের কোনো ভরনপোষণ দেয় না সে। তবুও আমি একসাথে থাকার চেষ্টা করেছি। কিন্তু অবশেষে কোনো পথ না পেয়ে ন্যায় বিচার পেতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছি।

 

আরও পড়ুন: খুলনায় দুই শিশুসহ একই পরিবারের তিনজনকে হত্যা

 

এদিকে হাসানুল কবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার সাবেক স্ত্রী ও তার পরিবার আমাকে মানসিকভাবে ব্লাকমেইল করে চতুরতার সাথে আমার থেকে প্রায় বর্তমান মূল্যের প্রায় দুই কোটি টাকার সম্পত্তি লিখে নিয়েছে। তদন্ত হলে আমি সব প্রমাণ দিতে প্রস্তুত। পরকীয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন