হাদীসের বর্ণনা অনুযায়ী, ফরজ নামাজ সম্ভব হলে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ আদায় করবেন। দাঁড়ানো যদি কষ্টকর হয় তাহলে বসে স্বাভাবিক রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করবেন। এভাবে নামাজ আদায় করতে পারলে পরবর্তী সময়ে তা পুনরায় পড়তে হবে না।
তবে যদি কেবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদার সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ পড়ে নেবেন। এক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে সতর্কতামূলক ওই ফরজ নামাজ আবার পড়ে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ডালিম নিয়ে পবিত্র কোরআনে যা বলা হয়েছে
বাসে সাধারণত দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়া যায় না। তাই কাছাকাছি যাতায়াতের ক্ষেত্রে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার আগে গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে না বলে মনে হলে এবং নেমে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বা অসুবিধাজনক মনে না হলে পথিমধ্যে নেমে ফরজ নামাজ পড়ে নেবেন। আর দূরের যাত্রা হলে অথবা যেক্ষেত্রে নেমে গেলে ঝুঁকি অথবা সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে, সেক্ষেত্রে বাস না থামলে সিটেই যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ আদায় করে নেবেন এবং সতর্কতামূলক পরবর্তী সময়ে এর কাজা করে নেবেন। (ইলাউস সুনান: ৭/২১২; মাআরিফুস সুনান: ৩/৩৯৪; আদ্দুররুল মুখতার: ২/১০১)
নৌযানে নামাজ আদায়ে করণীয়
১. দীর্ঘযাত্রায় বাসচালকদের উচিত ফরজ নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে কোনো মসজিদে যাত্রাবিরতি করা।
২. নামাজে সমস্যা হতে পারে, এমন সময় যানবাহনে ওঠা উচিত নয়। তবে প্রয়োজনে রওয়ানা করতে হলে যেন নামাজ কাজা না হয়; এ ব্যাপারে যত্নবান থাকা চাই।
৩. যানবাহনে নামাজ পড়ার সময় কেবলামুখি হতে যথাসাধ্য চেষ্টা করবেন। যদি গাড়ি কেবলামুখ থেকে অন্যদিকে ঘুরে যায়, তবে নামাজে থাকা অবস্থায় কিবলার দিকে ঘুরে যাবেন। যদি সম্ভব না হয়, তাহলে যেদিকে মুখ হয়, সেদিকে মুখ রেখেই নামাজ শেষ করবেন। কিন্তু ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কেবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় না করলে, এই নামাজ পরে আবার পড়ে নিতে হবে। কেবলামুখি হয়ে নামাজ আদায় করতে পারলে, পরে তা আবার আদায় করার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন: নবীজির মেরাজ কখন হয়েছে?
৪. নৌযানে দাঁড়িয়ে নামাজ পড়ার কারণে মাথা চক্কর দিলে সর্বসম্মতিক্রমে বসেই নামাজ পড়া যাবে।
৫. চলন্ত রেলে নামাজ পড়া বাইরে সমতলে নামাজ পড়ার মতোই।
৬. সমতলের মতো উড়োজাহাজেও নামাজ আদায় করা যাবে। কাবা শরিফকেই সামনে রেখে নামাজ পড়তে হবে এ রকম কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরং কাবার বরাবর ওপরের দিকে পুরো বায়ুমণ্ডলই কেবলা। তাই যত উঁচু স্থানেই মানুষ থাকুক নামাজ আদায় করা যাবে। (জাদিদ ফিকহি মাসায়েল: ১/ ৮৭-৯০)