নেত্রকোনায় আন্দোলনের মুখে উচ্ছেদ অভিযান বাতিল

৪ সপ্তাহ আগে
বিক্ষোভ কর্মসূচির মুখে নেত্রকোনায় আবারও পিছাল রেলের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। প্রথমে দুই মাসের পর আবারও এক মাস সময় পেলো রেলের জায়গায় বসবাসকারীরা।

সোমবার (৭ জুলাই) সকাল ১০টা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নিলেও ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতাদের বিক্ষোভ কর্মসূচির মুখে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সড়কে আটকা থাকে অভিযান পরিচালনা কারী রেল কর্তৃপক্ষ। এতে সাতপাই রেলক্রসিং সড়কের যাতায়াতে ভোগান্তিতে পড়েন পথচারীরা।


পরে সেনাবাহিনীর মধ্যস্থতায় ব্যবসায়ী এবং রেল কর্তৃপক্ষের মধ্যে দীর্ঘ আন্দোলনকারীদের ৫ জন প্রতিনিধির সমন্বয়ে দুই ঘণ্টা সমঝোতা আলোচনায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
যারা বৈধভাবে লিজ নেয়া কাগজ দেখাতে পারবে তাদের স্থাপনা উচ্ছেদ করবে না রেল কর্তৃপক্ষ।


আগামী ৮ আগস্ট পর্যন্ত বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে সকলকে নিজ নিজ অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা দিয়ে বিদায় নেন রেলের ডেপুটি কমিশনারসহ সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।


জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু জানান, রেলের জায়গা কোথা থেকে কোন পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলবে তা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়াও রেলের জায়গা আওয়ামী যুবলীগের আরাফাত উল্লাহ জুয়েল লিজ নিয়ে ৮৪ টি দোকানের অধিকাংশ জায়গা দখল করে রয়েছে। তার লিজ বাতিল করতে হবে।
এরপর যারা লিজ নিয়ে আসবে আগামী ৭ আগস্ট তারিখের মধ্যে তারা থাকবে।


এদিকে অভিযানে আসা রেলের নিরাপত্তা বাহিনী, পুলিশ, ভূমি কর্মকর্তাদের সাথে আসা গৌরিপুর রেলওয়ের সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো কামরুজ্জামান জানান, রেলের আইন অনুযায়ী ১৮৬১ সালের ৫ নং আইনের ১২ নং ধারা মোতাবেক রেল লাইনের দুই পাশে ২০ থেকে ২৫ ফুট করে জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি থাকে। অথচ কেউ মানে না।


জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ১ নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল আলম সবুজ বলেন, দুপাশে পরিষ্কার থাকুক আমরাও চাই। কিন্তু ১৯৯৩ সনের মাস্টারপ্ল্যানে ৮৪টি প্লট দেয়া হয়েছিল, লিজে রেলের জায়গা থেকে সেগুলোর বাইরে যারা যেখানে খুশি দোকান দিচ্ছে তাদের উচ্ছেদ আমরাও চাই। রেল লাইনের ৫০ ফুট পর্যন্ত খালি ছিল, একটি পুকুর ভরাট করেছি। অন্যটি খালি করে দিয়েছি। ওইগুলা তে লাইসেন্স ছাড়া চলছে।


অন্যদিকে আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের পক্ষ থেকে এনসিপি নেতা প্রীতম সোহাগ ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস মনিরুজ্জামান দুদু জানায়, রেলওয়ের নাম করে এর আগেও সময় নেয়ার সময় রেলওয়ে কর্মকর্তা পরিচয়ে হোটেলে থেকে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে স্থাপনা উচ্ছেদ না করার শর্তে।


আরও পড়ুন: পতেঙ্গা সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় ২০টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ


এ বিষয়ে রেলওয়ে সার্ভেয়ার (কাননগো) সাজ্জাদুল ইসলাম জানান, এগুলো মিথ্যা। তবে আন্দোলনকারীরা বলিষ্ঠভাবে এই অভিযোগ উত্থাপন করে সেনাবাহিনীসহ সকল বাহিনীর সামনে।


ঢাকা থেকে অভিযান পরিচালনা করতে আসা ডেপুটি কমিশনার (রেলওয়ে ভূমি ইমারত) ও বিভাগীয় ভূ সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দীন মাহমুদ জানান, এর আগে আপনারা সময় চেয়েছেন আমরা দিয়েছি। জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস আলোচনা করে এই সময় নিয়েছিলেন। কিন্তু পরে শুনলাম আমরা টাকা নিয়ে সময় দিয়েছি এগুলো মিথ্যা প্রপাগান্ডা। আজও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে মত বিনিময় করে জেলা প্রশাসনের প্রতিনিধি হাসিব উল আহসান আমাদের সঙ্গে এসেছেন।


আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কথায় আসছি। কিন্তু এখানে যে আন্দোলন হচ্ছে তার প্রেক্ষিতে সকলের সঙ্গে কথা বলে আবারও এক মাস সময় দেয়া হয়েছে। এরমধ্যে যারা সঠিক কাগজ দেখাতে পারবে তদেরকে ত আমরা  উচ্ছেদ করবো না।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন