রোববার (৩১ আগস্ট) রাতে প্রায় ছয় ঘণ্টার দীর্ঘ মন্ত্রিসভার বৈঠকে গাজা সিটির সম্ভাব্য আক্রমণ নিয়ে ইসরাইলি নেতাদের মধ্যে বিভাজন দেখা দিয়েছে।
বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও তার মন্ত্রীদের সঙ্গে সেনাপ্রধান ইয়াল জামিরের তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। মন্ত্রিসভার সদস্যরা গাজা সিটিতে অভিযান দ্রুত এগিয়ে নিতে চান, কিন্তু সেনাপ্রধান রাজনীতিকদের যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে পৌঁছানোর আহ্বান জানান।
টাইমস অব ইসরাইলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামির গাজা সিটি দখলের তীব্র বিরোধিতা করেছেন, কারণ তিনি মনে করেন এতে সেনাদের জীবন এবং হামাসের বন্দি থাকা ৪৮ জনের জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে।
আরও পড়ুন: গাজায় অনাহারে একদিনে আরও ১৩ জনের মৃত্যু
বৈঠকে উপস্থিত অন্তত চারজন মন্ত্রী এবং দুইজন সামরিক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরাইলের সেনাপ্রধান মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেন, আইডিএফ এরইমধ্যে যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করেছে বন্দিদের মুক্তির জন্য এবং এই বিষয়ে ভোট নেয়া উচিত।
জামির সতর্ক করে বলেন, গাজা অভিযান জিম্মিদের জীবনের ঝুঁকি বাড়াবে এবং চাপের মুখে থাকা সেনাবাহিনীকে আরও বিপদে ফেলবে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, তবে নেতানিয়াহু চুক্তি নিয়ে আংশিক মুক্তি বা ভোটের প্রস্তাব গ্রহণ করেননি। বর্তমান চুক্তি অনুযায়ী, ১৮ জন মৃত বন্দির লাশসহ ১০ জন জীবিত বন্দিকে মুক্ত করা হবে এবং ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত হবে, যা বাকিদের মুক্তি এবং যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির ভিত্তি তৈরি করতে সাহায্য করবে।
আরও পড়ুন: গাজা যুদ্ধ / বিশ্ববাসীর আস্থা হারাচ্ছে ইসরাইল, মন্তব্য ট্রাম্পের
এর আগে ২০ আগস্ট নেতানিয়াহু গাজা সিটি দখলের অভিযান ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেন। তবে পরদিনই সেনাবাহিনী সতর্ক করে জানায়, এতে জিম্মিদের ঝুঁকি বাড়বে এবং মানবিক সহায়তা কার্যক্রম চালাতে আরও সময় প্রয়োজন হওয়ায় অভিযান শুরু করতে কমপক্ষে দুই মাস লাগবে।
এদিকে এক জরিপে দেখা গেছে, ইসরাইলের রিজার্ভ সেনাদের একাংশ সরকারের পরিকল্পনায় অসন্তুষ্ট। তারা অভিযোগ করেছেন, সরকারের স্পষ্ট কৌশল নেই, যুদ্ধ-পরবর্তী গাজা পরিকল্পনা নেই এবং বিজয়ের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যও নির্ধারণ করা হয়নি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গাজায় যুদ্ধরত একজন ইসরাইলি রিজার্ভ সেনা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমি মনে করি না আমরা এমন কিছু করছি যা হামাসকে জিম্মি মুক্ত করতে কার্যকর চাপ দিচ্ছে।’
সূত্র: টাইমস অব ইসরাইল, রয়টার্স
]]>