বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেন নুরাল পাগলের শ্যালিকা শিরিন বেগম।
মামলায় ৯৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট তামজিদ হোসেন মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পিবিআইকে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার আইনজীবী মো. শরিফুল ইসলাম।
আরও পড়ুন: রাজবাড়ীতে কৃষককে গলা কেটে হত্যায় ১০ জনের যাবজ্জীবন
মামলায় সরকারি গোয়ালন্দ কামরুল ইসলাম কলেজের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ খন্দকার আব্দুল মুহিত হীরাকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিরা হলেন, গোয়ালন্দ উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির, উপজেলা ইমাম সমিতির সভাপতি ও উপজেলা ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মাওলানা জালাল উদ্দিন প্রামাণিক, গোয়ালন্দ উপজেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও উপজেলা ইমান আকিদা রক্ষা কমিটির সদস্য সচিব আইয়ুব আলী খান, গোয়ালন্দ উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি গোলাম মাহাবুব রাব্বানী, গোয়ালন্দ আলজামিয়া নিজামিয়া আরাবিয়া কওমী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আমিনুল ইসলাম কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর গোয়ালন্দ উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম, গোয়ালন্দ উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম মুফতি আজম, গোয়ালন্দ বাজার বড় মসজিদের ইমাম হাফেজ আবু সাঈদ (কারাগারে আছেন), জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) গোয়ালন্দ উপজেলা শাখা সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী রাকিব হাসান, যুগ্ম সমন্বয়কারী মো. নাজমুল ইসলাম, ঢাকা জজ কোর্টের আইনজীবী মকিম মণ্ডল, দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার গোয়ালন্দ উপজেলা সংবাদদাতা ও জামায়াত সদস্য মেহেদুল হাসান আক্কাছ প্রমুখ।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর রাতে নুরাল পাগলের দরবারে হামলায় নিহত রাসেল মোল্লার বাবা উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আজাদ মোল্লা বাদী হয়ে গোয়ালন্দ ঘাট থানায় একটি মামলা করেন। মামলায় রাসেল হত্যাসহ নুরাল পাগলের দরবারে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, কবর থেকে নুরাল পাগলের লাশ উত্তোলন করে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে নিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করা হয়। এতে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। ওই মামলায় পুলিশ মোট ১২জনকে গ্রেফতার করে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এছাড়া নুরাল পাগলের দরবারে হামলাকে কেন্দ্র করে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় ৬ সেপ্টেম্বর রাতে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সেলিম মোল্লা বাদী হয়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় পুলিশ মোট ১৬ জনকে গ্রেফতার করেছে।
আরও পড়ুন: নিখোঁজের ৭ মাস পর খবর এলো রাশিয়ার হয়ে যুদ্ধে প্রাণ গেছে রাজবাড়ীর নজরুলের
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর জুমার নামাজের পর গোয়ালন্দ বাজার শহীদ মহিউদ্দিন আনসার ক্লাবে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে উপজেলা ইমান আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদী জনতা। বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল উচ্ছৃঙ্খল মানুষ ওইদিন বেলা ৩টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দফায় দফায় নুরাল পাগলের দরবারে হামলা চালায়। হামলাকারীরা শরিয়ত পরিপন্থীভাবে দাফনের অভিযোগ এনে নুরাল পাগলের লাশ কবর থেকে তুলে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দের পদ্মার মোড় এলাকায় পুড়িয়ে দেন।
এছাড়া উপজেলা ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি ও তৌহিদী জনতার পূর্বঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে একদল লোকের এই হামলায় ১০ থেকে ১২জন পুলিশ সদস্যসহ অন্তত অর্ধশত ব্যক্তি আহত হন। পুলিশের দুটি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আহত হয়ে মারা যান রাসেল মোল্লা। তিনি গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পূর্ব তেনাপচা ঝুটুমিস্ত্রি পাড়া গ্রামের আজাদ মোল্লার ছেলে।
]]>

৩ দিন আগে
৩








Bengali (BD) ·
English (US) ·