নিহত সামিউলের কবর জিয়ারত ও শ্রদ্ধা জানাল বিমান বাহিনী

১ দিন আগে
মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রশিক্ষণ বিমান দুর্ঘটনায় নিহত বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জের কিশোর সামিউল করিমের কবর জিয়ারত ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে বাংলাদেশ বিমান বাহিনী।

শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের দেশখাগকাটা গ্রামে সামিউলের পারিবারিক কবরস্থানে বিমান বাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল এ শ্রদ্ধা নিবেদন করে। এরপর তারা মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনায় কবর জিয়ারত ও মোনাজাতে অংশ নেয়। স্থানীয় মসজিদের খতিব মোনাজাত পরিচালনা করেন।


এ সময় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নিহত সামিউলের মা-বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী প্রধানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন মীর্জা নাজমুল কবীর। 

আরও পড়ুন: সামিউল বাবার দিকে আসছিল, তখনই পিঠে এসে পড়ে বিমানের জ্বলন্ত অংশ

তিনি বলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনায় একটি অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। নিহত সামিউলের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহায়তা দেওয়া হবে। এই দূরগ্রাম এলাকায় এসেছি শুধু শিশুটির কবর জিয়ারত নয়, তার পরিবারের পাশে থাকার অঙ্গীকার নিয়েই।’


সামিউল করিম সামি বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ পৌরসভার খারকি এলাকার বাসিন্দা এবং রেজাউল করিমের ছোট ছেলে। বড় বোন স্নেহা এবার মাইলস্টোন স্কুল থেকেই এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ অর্জন করেছে। দুর্ঘটনার পর সামিউলের মরদেহ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) থেকে গ্রামের বাড়িতে আনা হয়। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বীরমুক্তিযোদ্ধা মোস্তফা কামাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে জানাজা শেষে তাকে নানা বাড়ির পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।


একের পর এক স্মৃতি আজও তাড়িয়ে বেড়ায় বাবা রেজাউল করিমকে। ঘটনার দিনও তিনি নিজেই সামিউলকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে গেটের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। ছেলেটি যখন দোতলায় উঠছিল, তখনও তাকিয়ে ছিলেন তিনি। আবার দুপুরে ছুটি হলে গেটে দাঁড়িয়ে ছেলেকে নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন। সামিউল ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাবার দিকে এগিয়ে আসছিল, তখনই আকস্মিকভাবে বিমান বিধ্বস্ত হয়ে একটি জ্বলন্ত অংশ সামিউলের শরীরে আঘাত করে। সামিউলের শরীরের পেছনের অংশ পুড়ে যায়। রেজাউল করিম ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন আমার ছেলেকে বাঁচান, হেল্প… হেল্প । একজন সেনা সদস্য নিজের গায়ের পোশাক খুলে দিয়ে সহায়তা করেন। পরে সামিউলকে সামরিক হেলিকপ্টারে করে সিএমএইচে নেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসক জানান, তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি।

আরও পড়ুন: সামিউলের তৈরি ‘ডা. নীলা’ চিকিৎসা দিচ্ছেন গ্রামের মানুষদের

রেজাউল করিম বলেন, ‘আমার স্বপ্ন ছিল ছেলেকে ইঞ্জিনিয়ার বানাবো। কিন্তু আমার চোখের সামনেই সব শেষ হয়ে গেল। আমার ছেলেটা জ্বলছিল, আমি কিছুই করতে পারিনি। এখন আর ঘুম আসে না। কীভাবে ওকে ছাড়া বাঁচব জানি না।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন