নিষেধাজ্ঞা-কর্মবিরতির ফাঁদে বেনাপোল বন্দর, রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা

২ সপ্তাহ আগে
চার দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন করছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। বেনাপোল কাস্টমস সদস্যরা কাজ না করায় বন্ধ রয়েছে বন্দর থেকে পণ্য খালাস। এছাড়াও রয়েছে উভয় দেশের বিভিন্ন পণ্যের ওপর পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞা। এতে রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

রোববার (২৫ মে) সকাল থেকে আবারও কাস্টমস সদস্যরা কর্মবিরতি শুরু করেছেন বেনাপোল বন্দরে। এতে কোনো রকমে আমদানি বাণিজ্য চললেও বন্দর থেকে পণ্য খালাস বন্ধ রয়েছে।


একদিকে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে এনবিআর সংস্কারের দাবিতে এনবিআর সংস্কার পরিষদের একের পর এক নানা কর্মসূচিতে অচলাবস্থার মধ্যে পড়েছে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক কার্যক্রম। এতে সময় মতো পণ্য খালাস নিতে না পারায় বিরুপ প্রভাব পড়েছে রাজস্ব আয়েও। চলমান অচলাবস্থা কাটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন বাণিজ্যিক সংশিষ্টরা।


বাণিজ্যিক সংশ্লিষ্টরা জানান, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়ার কারণে স্থলপথে সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য হয় বেনাপোল ও পেট্রাপোল বন্দরের মধ্যে। তবে ৫ আগস্টের পর থেকে কখনও স্থলপথে পণ্য আমদানি, রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা, কখনো বিভিন্ন দাবিতে কাস্টমসের কর্মবিরতিতে নানা প্রতিকূল অবস্থা মোকাবিলা করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। এতে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরটি দিয়ে বাণিজ্য ও রাজস্ব ঘাটতি দেখা দিয়েছে। 

আরও পড়ুন: জনবল সংকটে ৬ মাস ধরে বন্ধ বেনাপোল বন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ ল্যাব

ব্যবসায়ীরা বলছেন, এনবিআর সংস্কারের দাবি নিয়ে এনবিআর সংস্কার পরিষদের নানা কর্মসূচিতে গত ১১ দিনে ৯ দিন কর্মবিরতি পালন করেছে কাস্টমস সদস্যরা। এসময় দিনের বড় একটি সময় বন্ধ হয়ে পড়ে আমদানি বাণিজ্য। স্বাভাবিক সময়ে দিনে গড়ে ৫০০ ট্রাক পণ্য আমদানি ও ২৫০ ট্রাক পণ্য রফতানি হলেও সবশেষ শনিবার (২৪ মে) আমদানি ছিল ২৫১ ট্রাক ও রফতানি হয়েছে মাত্র ১৩১ ট্রাক। এছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতায় পাল্টাপাল্টি নিষেধাজ্ঞায় জরুরি পণ্য স্থলপথে আমদানি, রফতানি হচ্ছে না। 


এদিকে কর্মবিরতি সময় কাস্টমস রফতানি বাণিজ্য  ও পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত ব্যবস্থা সচল রাখছে। তবে আমদানি বন্ধ রাখায় রফতানি পণ্য নিতে চাইছে না ভারতীয় ব্যবসায়ীরা।


বেনাপোল আমদানি, রফতানি সমিতির সভাপতি সহসভাপতি আমিনুল হক বলেন, ‘বৃহস্পতিবার কোনোরকমে কাজ হলেও আবার ২৪ ও ২৫ মে এনবিআরের আওতাধীন কাস্টমস ভ্যাট অফিস, কাস্টমসসহ সংশিষ্ট কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে কর্মবিরতি চলছে। এ অবস্থা চলতে থাকায় তারা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সময় মতো জরুরি পণ্য সরবরাহ করতে পারছেন না। বাণিজ্যে অচলাবস্থা নিরসনে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ রাখছি।’


বেনাপোল রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার সাইদুর রহমান জানান, ভারত ও বাংলাদেশ স্থলপথে নানা নিষেধাজ্ঞায়  আমদানি কমেছে। এতে এবার রেলে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কষ্ট হয়ে পড়বে।

আরও পড়ুন: বেনাপোল বন্দরে মাছ রফতানি স্বাভাবিক

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়নের কাস্টমস বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে ২২ মে দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। আমরা আশা করছিলাম এ ধরনের পদক্ষেপে চলমান অচলাবস্থা কাটতে পারে। কিন্তু কোনো সমাধান হলো না।’


বেনাপোল বন্দর উপপরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, কাস্টমসের কর্মবিরতির কারণে স্বাভাবিক বাণিজ্য হচ্ছে না। এতে বাণিজ্য ও রাজস্ব ঘাটতির শঙ্কা রয়েছে।


রাজস্ব আহরণকারী বেনাপোল সোনালি ব্যাংকের এজিএম জহির রায়হান জানান, ‘একদিকে নিষেধাজ্ঞা অন্যদিকে কাস্টমসের কর্মবিরতির কারণে আশানুরুপ রাজস্ব আমরা আহরণ করতে পারছি না।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন