নির্মাণ ত্রুটি, গতির ঝড় আর থ্রি হুইলারে ভয়ংকর দেশের মহাসড়ক

১ সপ্তাহে আগে
একদিকে মাত্রাতিরিক্ত গতি অন্যদিকে থ্রি হুইলার আতঙ্ক। সবমিলিয়ে মহাসড়ক যখন মরণফাঁদ তখনও নির্বিকার প্রশাসন। নিয়ন্ত্রণ করতে না পারার ব্যর্থতা ঢাকতে দোহাই দিচ্ছেন মানবিকতার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। অপরাধ করলে শাস্তি অনিবার্য।

রাস্তায় চলতে গেলে হরহামেশায় চোখে পড়ে দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া যানবাহনের। মূলত অতিরিক্ত গতি আর কে কার আগে যাবে সেই প্রতিযোগিতায় সড়কে দুর্ঘটনা এবং হতাহতের মিছিল থামছেই না। এরসাথে সড়কের অব্যবস্থাপনা তো আছেই। সবমিলে দেশের মহাসড়কগুলো এক ভয়ানক মরণফাঁদ।


তথ্য বলছে, ২০২৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৭ হাজার ৯০২। যার ৩৪ দশমিক ৮৬ শতাংশই জাতীয় মহাসড়কে, আর ২৮ দশমিক ৪১ শতাংশ আঞ্চলিক সড়কে। অর্থাৎ, আঞ্চলিক সড়কের তুলনায় জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা এবং মৃত্যুর হার বেশি।


এসব দুর্ঘটনা যে শুধু গতি বা রেষারেষির কারণে ঘটে তেমন নয়, মহাসড়কে আছে থ্রি হুইলার বা অটোরিকশা আতঙ্কও। গত নয় বছরে নিবন্ধিত যানবাহনের পাশাপাশি চার থেকে পাঁচ গুণ বেড়েছে অপেক্ষাকৃত ছোট যানবাহনের সংখ্যা। কখনও অর্থ, কখনও আবার ভিন্ন পন্থায় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দ্রুতগতির যানবাহনের সাথে একই লেনে মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব যান। যদিও আইন অনুযায়ী মহাসড়কের একই লেনে এসব কমগতির যানবাহন চলার নিয়ম নেই।


ফরিদপুর হাইওয়ে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের তথ্য বলছে, গত বছর শুধু ঢাকা-খুলনা এবং ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন ৩০০ জন।


থ্রি হুইলাম, নসিমন-করিমনের চালকরা বলছেন, টাকার বিনিময়ে তারা সড়কে চলছেন। আগে ২০ থেকে ৫০ টাকায় চলতে পারলেও এখন তার পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে। কখনো কখনো মামলাও খেতে হয় তাদের।


কিন্তু এতকিছুর পরও স্থানীয় পর্যায়ে স্বল্প দূরত্বে এসব যানের ব্যাপক চাহিদা থাকায় তা নিয়ন্ত্রণে আনা কষ্টসাধ্য বলে দাবি করছে পুলিশ প্রশাসন। এজন্য কখনো কখনো মানবিক হতে হয় বলেও শোনা যায়। যদিও মানবিকতার বিষয়টি উড়িয়ে দিয়ে মাদারীপুর রিজিওনের পুলিশ সুপার মো. শাহিনুর আলম খান বলেন, শুধুমাত্র রোগীবহনকারী কোনো যানের ক্ষেত্রে তারা মানবিকতা দেখান। কিন্তু সাধারণ যাত্রীবাহী যানের ক্ষেত্রে জরিমানা, মামলা দেন।


আর দুর্ঘটনা কমাতে ত্রুটিমুক্ত মহাসড়ক নির্মাণের পাশাপাশি সার্ভিস লেন তৈরির পরামর্শ দেন যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও বুয়েট অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান। বলেন, আমাদের দেশের অধিকাংশ মহাসড়কের নির্মাণে ত্রুটি আছে। গাড়ির নিবন্ধন, ফিটনেস ও চালকদের লাইসেন্স নেই। এছাড়া স্থানীয় মানুষের কাছে অটোরিকশা চাহিদা থাকায় তা নির্মূল করা কঠিন। ফলে আলাদা লেন তৈরি করতে হবে। যেখান দিয়ে কম গতির যানবাহনগুলো চলতে পারবে। এতে দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন