ভোটের আগের দিন অর্থাৎ সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে সরেজমিনে ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি প্রবেশ পথে অবস্থান নিয়েছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। তাদেরকে সাহায্য করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কাউট সদস্যরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টিকারযুক্ত যানবাহন, গণমাধ্যম কিংবা জরুরি সার্ভিসের গাড়ি ছাড়া ক্যাম্পাসে কোনো যানবাহন প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরও ঢুকতে হচ্ছে নিজেদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিচয়পত্র দেখিয়ে।
আরও পড়ুন: নকল আইডি কার্ড দেখিয়ে ঢাবিতে প্রবেশের চেষ্টা, যুবক আটক
প্রবেশপথ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বত্রই পুলিশের অবস্থান রয়েছে। টিএসসি সংলগ্ন ডাসে পুলিশের অস্থায়ী একটি ক্যাম্পও করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশের বম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এবং ডগ স্কোয়াড নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত আছে।

বাইরে থেকে ঢুকতে না দেয়ায় ক্যাম্পাসে রিকশা তেমন একটা দেখা যাচ্ছে না। আবাসিক হলগুলোর অনেক শিক্ষার্থীই রাতে ফাঁকা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নতুন ভোটারদের মধ্যে কাজ করছে অন্যরকম উত্তেজনা। অনেকে তো আজকের রাতকে ঈদের আগের চাঁদ রাত বলেও অভিহিত করছেন। অনেকেই সাইকেল-বাইক নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
কয়েকজন মিলে দল বেঁধেও ঘুরতে দেখা যাচ্ছে অনেককে। টিএসসি, রাজু ভাস্কর্য, রোকেয়া হল এবং ভিসি চত্বরের সামনে ফল বেঁধে ছবিও তুলতে দেখা গেছে অনেককে। বিশেষ এই মুহূর্তকে ক্যামেরাবন্দি করে রাখার ক্ষেত্রে কোনো কমতি রাখছেন না ঢাবি শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে জমায়েত হয়েছেন প্রায় শ'দুয়েক শিক্ষার্থী। সবার আলোচনারই মূল বিষয় ডাকসু নির্বাচন। অনেকেই নিজের মতো করে ভবিষ্যদ্বাণী করছেন কে কোন পদে জিতবে। নতুন ভোটারদের মধ্যে কাজ করছে ডাকসু নির্বাচনে সাক্ষী হওয়ার আনন্দ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪-২৫ সেশনের শিক্ষার্থী মাহবুবুল আলম শামীম সময় সংবাদকে বলেন, 'ডাকসু নির্বাচনের সাক্ষী হতে পেরে অন্যরকম একটা অনুভূতি কাজ করছে। কাল ডাকসু, আজকে রাতটা চাঁদ রাতের মতো মনে হচ্ছে। ক্যাম্পাস ফাঁকা। কাল অনেক বড় ইভেন্ট। একটা উৎসবের আমেজ পাচ্ছি।'
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. ইসমাইল বলেন, 'অনেকদিন পর ডাকসু এল। কে জিতবে, কে হারবে সেটা নিয়ে বেশ একটা উত্তেজনা করছে। বন্ধুরা আড্ডা দিচ্ছি একসঙ্গে। ভালোই লাগছে। আগামীকাল সুষ্ঠু ভোট হোক এটাই চাওয়া।'

হলপাড়ার হলগুলোর সামনেও শিক্ষার্থীদের অবস্থান দেখা গেছে। সবার মধ্যেই একটা উৎসবের আমেজ। প্রার্থীদের অনেকেও শেষ মুহূর্তের গণসংযোগ করছেন। মধ্যরাত হয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় যেন পুরোপুরি জেগে আছে। উৎসাহ, উদ্দীপনা ও উৎকণ্ঠার মিশেলে ডাকসুর আগের রাত পার করছেন প্রার্থী ও ভোটাররা।
আরও পড়ুন: ডাকসু নির্বাচন / শিক্ষার্থীরা বিপুল সংখ্যায় ভোট দিতে আসবেন, আশা আসিফ নজরুলের
উল্লেখ্য, ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর)। সকাল ৮টা থেকে শুরু হবে ভোটগ্রহণ। চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
নির্বাচন কমিশন সূত্রমতে, ডাকসুর এবার মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৮৭৪ জন। এরমধ্যে ছাত্রী ১৮ হাজার ৯৫৯ জন। আর ছাত্র ২০ হাজার ৯১৫ জন।
এবার ডাকসুতে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ৪৭১ জন। আর ১৮টি হল সংসদে নির্বাচন হবে ১৩টি করে পদে। হল সংসদের ২৩৪টি পদের বিপরীতে প্রার্থী হয়েছেন ১ হাজার ৩৫ জন। অর্থাৎ সব মিলিয়ে এবার ভোটারদের ৪১টি ভোট দিতে হবে।
]]>