নিজেদের কারণেই স্টেডিয়ামে খাবার নেয়ার সুযোগ হারালেন দর্শকরা!

৩ সপ্তাহ আগে
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্টেডিয়ামে খাবার নিয়ে ঢোকেন দর্শকরা। কিন্তু বাংলাদেশে তেমন সুযোগ খুব একটা দেখা যায় না। প্রথা ভেঙে পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান টি-টোয়েন্টি সিরিজে খাবার এবং পানি নিয়ে স্টেডিয়ামে প্রবেশের সুযোগ রাখা হয়েছিল। কিন্তু এক ম্যাচ পরই সেই সুযোগ বন্ধ করে দিল বিসিবি।

সোমবার (২১ জুলাই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি এই নির্দেশনা দেয়।


বিসিবির সূত্রে জানা গেছে, সমর্থক এবং খেলোয়াড়দের নিরাপত্তাজনিত কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।


মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে খাবারের অতিরিক্ত দাম নিয়ে অভিযোগ অনেক আগে থেকেই। সমর্থকদের ভোগান্তি কমাতে তাই এবার শুকনো খাবার এবং পানি নিয়ে মাঠে প্রবেশের নিয়ম রেখেছিল বিসিবি। কিন্তু সুযোগটা নিজেদের কারণেই হারাতে হয়েছে সমর্থকদের!


এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিসিবি জানায়, 'বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আগামী ২২ এবং ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই ম্যাচ দেখতে আগ্রহী দর্শকদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, বিশেষ নিরাপত্তাজনিত কারণে কোনো প্রকার খাবার ও পানীয় নিয়ে শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।'


মূলত খাবার এবং পানি বলতে শুকনো খাবার ও প্লাস্টিকের পানির বোতলের কথা বুঝিয়েছিল বিসিবি। তবে সমর্থকরা সুযোগ পেয়ে সেটার সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। অনেকেই গতকালের ম্যাচে হটপট, টিফিন বক্স এবং স্টিলের বাটিতে করে খাবার নিয়ে এসেছেন। অনেকে আবার স্টিলের বোতলে করে এনেছেন পানি, যা খেলোয়াড় এবং সমর্থকদের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলছে। ফলে বিষয়টি বেশ উদ্বেগ তৈরি করেছে বিসিবি কর্মকর্তাদের মধ্যে।


আন্তর্জাতিক ম্যাচের প্রটোকল অনুযায়ী, নিজের ব্যাগ এবং প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ব্যতীত তেমন কিছুই নিয়ে মাঠে প্রবেশ করা যাবে না। শর্তসাপেক্ষে খাবার এবং পানি আনার সুযোগ দেয়া হলেও সেটা এমন কোনো পাত্রে আনা যাবে না যেটা নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। তবে গতকাল এই নিয়ম মানেননি সমর্থকরা। অনেকে বড় বড় পাত্রে খাবার আনায় নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও সেগুলো চেক করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে। এসব কারণেই খাবার নিয়ে মাঠে ঢুকতে দেয়ার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়েছে বিসিবিকে।

 

আরও পড়ুন: ইমনের ঝোড়ো ফিফটিতে পাকিস্তানকে হেসেখেলে হারাল বাংলাদেশ


এ প্রসঙ্গে বিসিবির একজন পরিচালক সময় সংবাদকে জানান, 'সমর্থকদের সুবিধার কথা চিন্তা করেই খাবার আনার সুযোগটা রাখা হয়েছিল। তবে বিষয়টিকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। শুকনো খাবার এবং প্লাস্টিকের বোতলে পানি আনার বদলে অনেকে ভারী জিনিসপত্র নিয়ে ঢুকতে চেয়েছে। বিসিবির কয়েকজন পরিচালক দাঁড়িয়ে থেকে গতকাল এমন পরিস্থিতি দেখেছেন। এটা নিরাপত্তা শঙ্কা তৈরি করছে। আর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীও বেশ বিরক্তি প্রকাশ করেছে। তাই বিসিবিকে বাধ্য হয়ে বাতিল করতে হলো।'


এর আগে গতকাল খাবার প্রবেশের সুবিধা পেয়ে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিলেন সমর্থকরা। ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এই সুবিধা চালু রাখার কথাও সেদিন জানিয়েছিলেন বিসিবি পরিচালক ইফতেখার আহমেদ মিঠু। তবে তা আর হলো না, এক ম্যাচেই বাতিল করতে হলো এই সুবিধা।


দায়টা যে অবশ্য শুধু সমর্থকদের, এমনও না। ম্যাচের আগের দিন বিসিবির প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে খাবার আনার ওপর নিষেধাজ্ঞা না দেখে গণমাধ্যমে খাবার এবং পানি আনা যাবে বলে প্রচার করা হয়। তবে ঠিক কোন পাত্রে এবং কীভাবে খাবার আনা যাবে- সে সম্পর্কে কোনো পরিষ্কার নির্দেশনা ছিল না। তাই এটিকেও বিশৃঙ্খলার অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করছেন কোনো কোনো দর্শক।


বিসিবির ওই পরিচালক অবশ্য খাবার এবং পানীয় সংক্রান্ত বিষয়ে বোর্ডের বিকল্প এক পরিকল্পনার কথা বলেছেন। স্টেডিয়ামের মধ্যে থাকা দোকানগুলোর খাবারের দাম নিয়ন্ত্রণ করে সমর্থকদের ভোগান্তি কমানো যায় কি না সেই ব্যাপারে ভাবছে বিসিবি। তবে বিষয়টি এখনও আলোচনার পর্যায়েই আছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন