খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর থেকে দেড় কিলোমিটার দক্ষিণে পানখাইয়া পাড়া। এই পানখাইয়া পাড়ার লাগোয়া এলাকা হলো নিউজিল্যান্ড পাড়া। পানখাইয়া পাড়া থেকে বেরিয়ে আপার পেরাছড়া গ্রামে যাওয়ার যে রাস্তাটি রয়েছে, সেটিকেই বলা হয় নিউজিল্যান্ড সড়ক।
সড়কের দুই পাশে সবুজ ক্ষেত। এটিই খাগড়াছড়ি শহরের একমাত্র সমতল ভূমি এবং ধানি জমির একমাত্র বিল। সবুজ শস্যক্ষেত, গাছগাছালি আর দূরের পাহাড়ের মিতালি মিলে এক অসাধারণ নান্দনিক সৌন্দর্য ছড়িয়ে আছে এখানে। শহরের ভেতরেই যেন পাহাড় আর ধানখেতের অপূর্ব সংমিশ্রণ। ল্যান্ডস্কেপের মিলের কারণেই স্থানীয়রা এর নাম দিয়েছেন নিউজিল্যান্ড পাড়া।
পাহাড়ি এই স্থান এতটাই সুন্দর যে মুহূর্তেই হারিয়ে যেতে পারেন কল্পনার রাজ্যে। এ কারণেই খাগড়াছড়ির এই এলাকা পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। বিস্তৃত পাহাড়ি ধানক্ষেত আর দূরের ছোট-বড় পাহাড়ের সারি দেখলেই মন জুড়িয়ে যায়।
আরও পড়ুন: খাগড়াছড়ির যন্ত্রদানবের নাম ‘চাঁদেরগাড়ি’
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ১৯৯৮ বা ১৯৯৯ সালের দিকে জমির মাঝ দিয়ে একটি কার্পেটিং সড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর থেকেই ওই এলাকায় মানুষের যাতায়াত শুরু হয়। বিকেলে অনেকেই ঘুরতে যেতেন সেখানে। তখন এক পাহাড়ি ভদ্রলোক এই রাস্তায় হেঁটে যেতে যেতে মন্তব্য করেন, ‘ঠিক যেন নিউজিল্যান্ডের বাতাস।’ এরপর থেকেই এলাকাটি নিউজিল্যান্ড নামে পরিচিতি পায়। পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে জমিতে বসতিও গড়ে ওঠে।
নিউজিল্যান্ড পাড়ার সবচেয়ে আকর্ষণীয় দৃশ্য হলো বর্ষার সময় আলুটিলা পাহাড়ের মেঘের ভেলা দেখা। এখানে শুধু পাহাড় আর সবুজ প্রকৃতিই নয়, সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তও দেখা যায় অসাধারণভাবে। আর ধান পাকলে নিউজিল্যান্ডের দুই পাশের জমিতে দেখা মেলে শত শত টিয়াপাখির। এ ছাড়া কাছাকাছি থেকে পাহাড়ি জনপদের জীবনযাত্রাও অনুভব করা যায়।
কীভাবে যাবেন নিউজিল্যান্ড পাড়ায়?
ঢাকা অথবা চট্টগ্রাম থেকে বাসে করে প্রথমে যেতে হবে খাগড়াছড়ি শহরে। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিকশায় করে সরাসরি পৌঁছে যাওয়া যায় নিউজিল্যান্ড পাড়ায়। শাপলা চত্বর থেকে অটোরিকশায় জনপ্রতি ভাড়া মাত্র ২০ টাকা।
কোথায় থাকবেন?
খাগড়াছড়ি শহরে পর্যটন মোটেল, হোটেল গাইরিংসহ বিভিন্ন মানের থাকার জায়গা রয়েছে। বাজেট অনুযায়ী হোটেল বা মোটেল খুঁজে নিতে পারবেন খুব সহজেই।
]]>