শনিবার (৫ জুলাই) ভোরে ওই ঘটনায় উত্তেজিত জনতা হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। পুলিশ অভিযুক্ত দুই নার্সকে আটক করেছে।
নবজাতকের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রসব ব্যথা উঠলে বেলটিয়া এলাকার মো. সোহেল মিয়ার স্ত্রী নরিন জান্নাতকে (২১) নগর মাতৃসদন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে কোনো চিকিৎসক উপস্থিত না থাকায় নার্সদের মাধ্যমেই প্রসব করানোর চেষ্টা চালানো হয়। গভীর রাতে নরিনের অবস্থার অবনতি হলে এক নার্স মেসেঞ্জারে অজ্ঞাতপরিচয় এক চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে রিপোর্ট পাঠান। এরপর কোনো ধরনের সিজার ছাড়াই টানাহেঁচড়া করে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করেন তারা। দীর্ঘ সময় চেষ্টা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত মৃত সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়।
নরিনের স্বামী সোহেল আনসারী অভিযোগ করেন, ‘বারবার ডাক্তার ডাকার জন্য বলেছি, কিন্তু ডাক্তার আসেনি। নার্স ও এক বয় মিলে প্রসব করানোর চেষ্টা করেছে। এতে আমার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। আমার স্ত্রীকেও প্রচুর রক্তক্ষরণে সংকটাপন্ন অবস্থায় তিন ঘণ্টা পর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।’
এ ঘটনায় শনিবার ভোর ৮টার দিকে নবজাতকের স্বজন ও স্থানীয় জনতা হাসপাতাল ঘেরাও করে বিক্ষোভ শুরু করে এবং আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নার্স শিরিনসহ দুজনকে হেফাজতে নেয়।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে অবহেলায় নবজাতকের মৃত্যুর অভিযোগ, হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ করে জরিমানা
হাসপাতালের টেকনোলজিস্ট রহিমা বেগম বলেন, ‘সেই সময়ে হাসপাতালে কোনো ডাক্তার ছিলেন না। নার্সরাই প্রসব করানোর চেষ্টা করে, এবং মৃত নবজাতক ভূমিষ্ঠ হয়।’
এ ঘটনায় রোগীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ায় পুলিশ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। হাসপাতালে গিয়ে কোনো দায়িত্বশীলকে পাওয়া না গেলেও বারবার চেষ্টা করেও প্রকল্প ব্যবস্থাপক মফিজ উদ্দিন শেখের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. আজিজুল হক বলেন, ‘হাসপাতালটি পৌরসভার প্রকল্পভিত্তিক। আমি পৌরসভার প্রতিনিধিকে নিয়ে হাসপাতাল পরিদর্শন করেছি। নবজাতকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। দুজনকে আটক করা হয়েছে। প্রসূতির চিকিৎসা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ ও শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্থানীয়রা দ্রুত দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।