নারীদের নিরাপদ বাইক রাইডিংয়ে খুলনায় অনন্য উদ্যোগ

৪ সপ্তাহ আগে
প্রয়োজন আর সাহস এই দুই মিলে এখন খুলনার রাস্তায় বাড়ছে নারীদের মোটরবাইক রাইডিং। কেউ যাচ্ছেন অফিসে, কেউ বিশ্ববিদ্যালয়ে, কেউবা পারিবারিক প্রয়োজনে। আগে যেখানে নারী বাইকার দেখা যেত বিরলভাবে, এখন সেখানে নিয়মিত দেখা মিলছে হেলমেট পরা আত্মবিশ্বাসী তরুণীদের। তবে নিরাপত্তা, সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা; সব মিলিয়ে পথটা এখনও পুরোপুরি মসৃণ নয়।

এই বাস্তবতায় নারীদের রাইডিংকে আরও নিরাপদ, সচেতন ও উৎসাহব্যঞ্জক করতে খুলনায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এক অনন্য আয়োজন ‘সেফ রাইড ট্রেনিং অ্যান্ড কম্পিটিশন’।

শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে খুলনার ময়ূরী আবাসিক এলাকায় এই প্রশিক্ষণ ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে হোন্ডা। অর্ধ শতাধিক নারী বাইকার এতে অংশ নেন।

তাদের লক্ষ্য- নিরাপদে মোটরবাইক চালানো শেখা, আত্মবিশ্বাস বাড়ানো এবং অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করা। অনেকে আবার প্রথমবারের মতো অংশ নিয়েছেন এমন প্রশিক্ষণে।


প্রশিক্ষণে অংশ নেওয়া নারীরা বলেন, রাস্তায় নামলে এখনো অনেক সময় কৌতূহলী দৃষ্টির মুখে পড়তে হয়। কেউ কেউ কটু মন্তব্যও করেন। তবুও নিজেদের কাজের প্রয়োজন আর স্বাধীনতার ইচ্ছাই তাদের এগিয়ে রাখছে।


সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মাসুমা আক্তার কুসুম বলেন, 'আগে একা কোথাও যেতে ভয় লাগত। এখন বাইক চালানো শিখে স্কুল, বাজার সব জায়গায় নিজেই যাই। এতে সময়ও বাঁচে, আর নিজেকে আরও শক্ত মনে হয়।'


আরেকজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন বলেন, 'ট্রাফিক জ্যামে সময় নষ্ট হত। এখন বাইক চালিয়ে ক্লাসে সময়মতো পৌঁছাতে পারি। তবে রাস্তায় নিরাপত্তা আর পার্কিং সুবিধা বাড়ানো দরকার।'


আরও পড়ুন: ১৪ বছর ধরে ফাইল বন্দী খুলনা সিটি করপোরেশনের বর্ধিতকরণ প্রকল্প


হোন্ডার উদ্যোগে আয়োজিত এই ট্রেনিং ক্যাম্পে নারীরা শিখেছেন রাইডিংয়ের মৌলিক কৌশল, হেলমেট সঠিকভাবে ব্যবহার, ব্রেক কন্ট্রোল, ট্রাফিক সিগন্যাল মানা এবং জরুরি পরিস্থিতিতে আত্মরক্ষার উপায়। পাশাপাশি ছিল বাইকের ফ্রি সার্ভিসিং কর্নার ও 'সেফ রাইড' প্রতিযোগিতা। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় সনদ ও পুরস্কার।


আয়োজকদের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে সড়ক দুর্ঘটনা শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সরকার যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে, তাতে নারী বাইকারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ প্রতিদিনই বাড়ছে নারী রাইডারের সংখ্যা।


আরও পড়ুন: ট্রাফিক কার্যক্রমে অবদান রাখায় খুলনায় ৩০ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা


এসটি হোন্ডা ওয়ার্ল্ডের স্বত্বাধিকারী মো. আমীর হোসেন বলেন, 'নারীরা এখন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা চাই তারা যেন নিরাপদে ও আত্মবিশ্বাস নিয়ে রাস্তায় চলতে পারে। এজন্যই আমরা নিয়মিত এমন প্রশিক্ষণ আয়োজন করছি।'


বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নারী বাইকারদের জন্য আলাদা পার্কিং ব্যবস্থা, নিরাপদ সড়ক অবকাঠামো, পর্যাপ্ত স্ট্রিটলাইট ও জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। তবেই নারীদের এই নতুন চলার পথ আরও গতিশীল হবে'

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন