বুধবার (২৫ জুন) সকালে গাজীপুর জেলার টঙ্গি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিকেলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ।
গ্রেফতাররা হলেন- নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা হান্নান সরকার (৬০), তার দুই ছেলে জুনায়েদ (২৬) ও ফারদিন (২২) এবং হান্নানের অনুসারী বাবু ওরফে জুয়াড়ি বাবু (৪০)।
এ বিষয়ে বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, 'বন্দর উপজেলার হাফেজীবাগ রেললাইন এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্বে নিহত আব্দুস কুদ্দুস হত্যা মামলায় সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারসহ এজাহারনামীয় চারজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তথ্য ও প্রযুক্তির সহযোগিতায় গাজীপুরের টঙ্গি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।'
এ নিয়ে দুই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৪ জন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানান ওসি লিয়াকত আলী।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুন আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সমর্থকদের মধ্যে দ্বন্দ্বে এক রাতে বন্দর উপজেলার হাফেজীবাগ এলাকার প্রয়াত সাদেক আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দুস (৭০) এবং পাশের শাহী মসজিদ এলাকার প্রয়াত আব্দুল জলিল মুন্সির ছেলে মেহেদী হাসান (৪২) নামে দুইজন নিহত হন।
নিহত আব্দুল কুদ্দুস পেশায় রাজমিস্ত্রি এবং মেহেদী হাসান বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।
এ ঘটনায় ২৩ জুন বন্দর থানায় পৃথক দু’টি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা দুটিতে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক দুই কাউন্সিলরকেও আসামি করা হয়েছে।
দিনমজুর আব্দুল কুদ্দুস (৬০) নিহতের ঘটনায় তার মেয়ে রোকসানা বেগম বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। মামলায় নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকারসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে এই মামলায়।
আরও পড়ুন: সাবেক সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল গ্রেফতার
একই দিন বন্দর থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মেহেদী হাসান (৪২) নিহতের ঘটনায় তার ভাই খালেদ সাইফুল্লাহ বাদী হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা করেছেন। ওই মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ মামলায় ৪ নম্বর আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর শাহীন মিয়াকে।
দুটি মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বন্দর রেললাইন, হাফেজীবাগ ও সালেহনগর এলাকায় আধিপত্য বিস্তার ও বিভিন্ন বিষয়কে কেন্দ্র করে সাবেক কাউন্সিলর হান্নান সরকার ও বাবু শিকদারের পক্ষের লোকজনের সঙ্গে সাবেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার পক্ষের জাফর-রনিদের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছিল।
এর জেরে শুক্রবার বন্দর রেললাইন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার জেরে পরদিন শনিবার রাতে মেহেদী ও কুদ্দুস খুন হন বলে উভয়ের মামলায় বলা হয়েছে।
দুটি মামলাতেই সাবেক দুই কাউন্সিলরকে হত্যাকাণ্ডের নির্দেশদাতা হিসেবে দেখানো হয়েছে। মামলা দুটিতে সাবেক আরেক কাউন্সিলর আবুল কাউসার আশার পক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্বে হত্যাকাণ্ড দুটি সংঘটিত হয়েছে বলে উল্লেখ থাকলেও আসামি তালিকায় তার নাম নেই।
তবে আশার পক্ষের রনি ও জাফরকে মেহেদী হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। অন্যদিকে কুদ্দুস হত্যা মামলায় বাবু শিকদার, শ্যামল ও বাবু ওরফে জুয়াড়ি বাবু আসামির তালিকায় আছেন।