নারায়ণগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গণে মারধরের মামলায় বিএনপি নেতা সাখাওয়াতের জামিন

৩ সপ্তাহ আগে
নারায়ণগঞ্জে আদালত প্রাঙ্গণে শিশু সন্তানদের সামনে বাবা ও মাকে মারধরের ঘটনায় দায়ের মামলায় মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ ৬ আসামি জামিন পেয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল মাসুদের আদালত এ জামিন মঞ্জুর করেন।


জামিনপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন: অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের অনুসারী তিন আইনজীবী খোরশেদ আলম, মো. আল আমিন ও বিল্লাল হোসেন এবং সাখাওয়াতের দুই সহকারী (মুহুরি) হিরণ বাদশা ও রাসেল বেপারী।


ভুক্তভোগী পরিবারের লিখিত অভিযোগের তিনদিন পর পুলিশ মামলা নিলেও চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যেই জামিন পেলেন আসামিরা।


আদালতের এজলাসে অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন নিজেই আসামিদের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। তার সঙ্গে এ শুনানিতে আরও অংশ নেন মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, ফতুল্লা থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আব্দুল বারী ভূঁইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সদর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার প্রধান এবং জেলা আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক নয়ন।


আরও পড়ুন: বন্যপ্রাণী হত্যা মামলায় জামিনের সুযোগ থাকছে না নতুন আইনে: পরিবেশ উপদেষ্টা


জামিনের সত্যতা নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইয়ুম খান বলেন, ‘আসামিরা ১০০ টাকার বন্ডের মাধ্যমে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে আদালত পুলিশ অংশ নিয়েছে এবং জামিনের বিরোধিতা করেছেন।’


তবে আদালতে শুনানির জন্য বাদীপক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী রাজিয়া সুলতানা।


তার অভিযোগ, তার মামলায় শুনানিতে অংশ নেয়ার জন্য আদালতের অন্তত চারজন আইনজীবীর সঙ্গে তিনি কথা বলেছিলেন এবং তাদের অনুরোধ করেছেন। কিন্তু প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাখাওয়াত হোসেন খানের বিরুদ্ধে কোনো আইনজীবী দাঁড়াতে চাননি।


জামিন পাওয়ার পর প্রতিক্রিয়ায় অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান বলেন, ‘আমার ক্লিন ইমেজকে নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমাকে এই মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। যারা বাদী হয়েছেন তারাই প্রথমে আইনজীবী সহকর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছিল। সেই ঘটনায় তারা মামলা দিতে গেলেও সেটি গ্রহণ করা হয়নি।’


অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান আরও বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে বলা হচ্ছে, আমি নাকি প্রশাসনকে ফোন করে মামলা নিতে নিষেধ করেছি। কিন্তু আমি কখনও কাউকে ফোন করিনি বরং বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা সরকারি আইনজীবীদের আমার বিরুদ্ধে আপত্তি জানাতে উদ্বুদ্ধ করেছে।’


আরও পড়ুন: বিপুল সংখ্যক জামিন দেয়ায় ব্যাখ্যা চাইলেন প্রধান বিচারপতি


অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেনের দাবি, তিনি সব সময় আইন ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রাখেন। ঘটনাস্থলে তিনি উপস্থিত না থাকা সত্ত্বেও তাকে আসামি করা হয়েছে। এই মামলায় সত্য প্রকাশ পাবে এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ মিথ্যা প্রমাণিত হবে।


উল্লেখ্য, গত ২৬ অক্টোবর দুপুরে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালত প্রাঙ্গণে চেক জালিয়াতি মামলার শুনানিকে কেন্দ্র করে মামলার বাদী স্যানিটারি ব্যবসায়ী ইরফান মিয়া, তার স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা ও শিশু সন্তানদের প্রকাশ্যে মারধর ও লাঞ্ছিত করা হয়।


এ ঘটনায় ওইদিন বিকেলে রাজিয়া সুলতানা বাদী হয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খানসহ ৬ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১২ জনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। তবে পুলিশ লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ না করায় রাজিয়া সুলতানা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে টানা দুদিন ফতুল্লা থানার গেটে অবস্থান নিয়ে কান্নাকাটি করেন।


এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে পুলিশ বুধবার (২৯ অক্টোবর) মামলাটি গ্রহণ করে নথিভুক্ত করে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন