নাম পরিবর্তন করলে আবার আকিকা দিতে হবে?

৩ সপ্তাহ আগে
আকিকা শব্দটি আরবি। আভিধানিক অর্থ কাটা, আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া আদায় করা, জানের সদকা দেয়া ও আল্লাহর নেয়ামতের মোকাবিলায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা। ইসলামি পরিভাষায় আকিকা হচ্ছে, নবজাতকের পক্ষ থেকে পশু জবাই করা। আলেমদের অনেকেই আকিকা করাকে সুন্নতে মুয়াক্কাদাহ বলেছেন।

অনেকে জানতে চান, আকিকার পর নাম কি পরিবর্তন করা যাবে?

 

এর উত্তরে ফুকাহায়ে কেরাম বলেন, আকিকার পর রাখা নাম কোনো কারণে পরিবর্তন করার প্রয়োজন হলে পরিবর্তন করার সুযোগ আছে। নাম পরিবর্তন করার পর আবার নতুন করে আকিকা দেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। (ফাতাওয়ায়ে ফকিহুল মিল্লাত: ১২/১৬৩)

 

নবী সা. নাম পরিবর্তন করতেন, হজরত ইবনু উমর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ সা. একজন মহিলার নাম ‘আসিয়া’ (অর্থাৎ পাপিষ্ঠা) থেকে পরিবর্তন করে ‘জামিলা’ (অর্থাৎ সুন্দরী) রাখেন। (সহিহ বুখারি: ৬১৯০, সহিহ মুসলিম: ২১৩৯)

 

খারাপ অর্থবোধক নাম পরিবর্তনের নির্দেশ দিতেন।  সাঈদ ইবনু আল-মুসাইয়্যাব (রহ.) তার দাদা থেকে বর্ণনা করেন, তার দাদা নবী ﷺ-এর নিকট এলেন। নবীজী সা. জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কী? তিনি বললেন, হাজন (অর্থাৎ কঠোর বা দুঃখজনক)। নবীজী সা. বললেন, তুমি ‘সহল’ (অর্থাৎ সহজ বা নমনীয়)। (সহিহ বুখারি: ৬১৯৩)

 

ইসলামে নাম পরিবর্তনের অনুমোদনও দিয়েছেন নবীজি। রাসুলুল্লাহ সা. মন্দ অর্থবোধক নামগুলো পরিবর্তন করতেন। তিনি পুণরায় আকিকা দিতে বলেননি। 

 

আরও পড়ুন: ফোরাত নদীতে স্বর্ণের পাহাড় নিয়ে যে ভবিষ্যদ্বাণী নবীজির


কত দিন পর আকিকা করবেন?

 

জন্মের সপ্তম দিন, সম্ভব না হলে ১৪তম দিন বা ২১তম দিন আকিকা করা সুন্নত। হজরত বুরায়দা (রা.) বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি অসাল্লাম বলেন, সপ্তম দিন অথবা চতুর্দশ দিন অথবা একুশতম দিন আকিকা কর। (তিরমিজি)

 

আকিকার গোশতের বিধান

 

অধিকাংশ আলেম আকিকার গোস্ত পাকানো মুস্তাহাব বলেছেন, এমনকি সদকার অংশও। হ্যাঁ, পাকানো ব্যতীত বণ্টন করাও বৈধ। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ছেলের পক্ষ থেকে সমমানের দুটি আর মেয়ের পক্ষ থেকে একটি বকরি জবেহ কর। (আহমদ, তিরমিজি)

 

কোরবানির পশুর ক্ষেত্রে যেসব শর্ত রয়েছে আকিকার পশুর ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য। অর্থাৎ পশুর কোনো অংশ মজদুরি হিসেবে দেয়া যাবে না। এর চামড়া বা মাংস বিক্রি করা যাবে না বরং এর মাংস খাবে, সদকা করবে ও যাকে ইচ্ছে উপহার হিসেবে প্রদান করবে।

 

আরও পড়ুন: শাম অঞ্চল নিয়ে কোরআন ও হাদিসে যা বলা হয়েছে


একদল আলেম বলেছেন, কোরবানিতে যেমন অংশীদারিত্ব বৈধ এখানে সে অংশীদারিত্ব বৈধ নয়। যদি কেউ গরু বা উটের মাধ্যমে আকিকা করতে চায় তাকে একজনের পক্ষ থেকে পূর্ণ একটি পশু জবেহ করতে হবে। রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের আমল ও বাণী থেকে এ মতই সঠিক মনে হয়।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন