কম খরচে কৃষকদের সেচ নিশ্চিত করতে নাটোরের সিংড়া উপজেলায় প্রায় ৭০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিএডিসি ৪০টি গভীর নলকূপ ও ১০৬ টি এলএলপি এবং বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ৭৮ টি গভীর নলকূপ ও ৩টি এলএলপি স্থাপন করে। সরকারি এই দুটি প্রতিষ্ঠানের স্থাপিত নলকূপের মাধ্যমে এই উপজেলায় সেচের আওতায় এসেছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমি।
তবে সরকারি সেচের আওতায় জমির মধ্যে অবৈধ ভাবে প্রায় আড়াই হাজার অগভীর নলকূপ স্থাপন করেছেন প্রভাবশালীরা। কেউ বাড়ির থেকে আবার কেউ পল্লী বিদ্যুৎ থেকে সরাসরি সংযোগ নিয়ে মোটর স্থাপন করেছেন। প্রভাবাশালীদের স্থাপিত মোটর থেকে নিজেদের পাশাপাশি অন্যের জমিতেও সেচ দিচ্ছেন। সরকারি সেচের চেয়ে সরাসরি স্থাপনে বিঘা প্রতি ১০০ টাকা করে কম নেয়া হচ্ছে। এতে করে সমবায়ের মাধ্যমে ও সেচ কমিটির নির্দেশনায় পরিচালিত সরকারি নলকূপগুলো বন্ধ হওয়ার পথে।
সিংড়ার ফলিয়া গ্রামের বিলে বিএডিসির সেচ পাম্পের ম্যানেজার মাহবুবুর রহমান বলেন, সরকারি পাম্পগুলো সমবায়ের মাধ্যমে ও উপজেলা সেচ কমিটির নির্ধারণ করে দেয়া টাকায় সেচ দেয়া হয়। তবে অবৈধ পাম্প স্থাপনকারীরা সরকারি সেচ প্রকল্পের মধ্যে সেচ দেয়ায় সরকারিভাবে সেচ প্রদান ব্যাহত হচ্ছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে সরকারি সেচ পাম্প বন্ধ হয়ে যাবে।
শেরকোল এলাকার কৃষক আব্দুর রশিদ বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের নজরদারির অভাবে সরকারি সেচের আওতায় কৃষি জমিতে অবৈধ সেচের নলকূপ বসছে।
আরও পড়ুন: ২ হাজার সেচ পাম্প গ্রিড ইন্টিগ্রেশনে ব্যয় ১৫৫ কোটি টাকা
অবৈধ স্থাপনকারীদের দাবি তারা নিজের জমিতে নলকূপ স্থাপন করেছেন। সরকারি খরচের চেয়ে বিঘাপ্রতি প্রায় ১০০ টাকা খরচ কম হওয়ায় তারা নলকূপ স্থাপন করেছেন।
সরকারি সেচ আওতায় এলাকায় বেসরকারি পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়ায় নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেটি করেনি পল্লী বিদ্যুৎ। অবৈধ নলকূপগুলোতে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে তারা।
নাটোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-০২ এর সিংড়া এরিয়ার ডিজিএম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আগের সরকারের সময় এই সংযোগ দেয়া হয়েছে। হাজার হাজার অবৈধ সংযোগ আগে থেকে হয়েছে। তাই তাদের সচেতন করা হচ্ছে।
সিংড়া উপজেলার সেচ কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম অবৈধভাবে পাম্প স্থাপনের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিএডিসি, বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
চলতি রবি মৌসুমে সিংড়া উপজেলায় প্রায় ৪২ হাজার হেক্টর জমিতে ধান ও চৈতালী ফসলের আবাদ হয়েছে।