বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত নাটোর সদর হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা দেড় শতাধিক ছাড়িয়েছে। হঠাৎ করে বিপুল সংখ্যক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হওয়ায় চিকিৎসক ও নার্সরা চরম চাপের মধ্যে পড়েছেন।
রোগী ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের অভিযোগ, পৌরসভার সরবরাহ করা পানি খেয়েই তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা তুতলি খাতুন বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভাত খেয়ে শুয়ে পড়ি। মধ্য রাত থেকে বমি শুরু হয়। এরপরে হাসপাতালে আসলে ডাক্তার বলে ডায়রিয়া হয়েছে। সকাল থেকে দেখি আমাদের এলাকার অনেক মানুষ ই ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন।’
আরও পড়ুন: নাটোরে নিজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার
ওই এলাকার বাসিন্দা নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমাদের এলাকায় অন্তত দেড় থেকে দুইশো মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। খাবার পানি থেকেই এই সমস্যা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কেননা এর আগেও কয়েক বছর আগে এই সমস্যা হয়েছিল। পানির লাইনগুলো অপরিষ্কার, পৌর কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয় না। আমরা চাই এই সমস্যাগুলোর স্থায়ী সমাধান।’
এসব বিষয়ে জানতে চাইলে নাটোর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রবিউল হক বলেন, ‘পৌরসভার দুই নম্বর ওয়ার্ডের একটি নির্দিষ্ট এলাকায় ডায়রিয়া রোগী বাড়তে শুরু করেছে। আমরা ওই এলাকায় মাইকিং শুরু করেছি যাতে আগামী দুই এক দিন পানির বিষয়ে সতর্ক থাকে। পানি পরীক্ষার জন্য ইতোমধ্যে নমুনা সংগ্রহ করে রাজশাহী পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করা হচ্ছে।’
নাটোরের সিভিল সার্জন মুক্তাদির আরেফিন বলেন, ‘আমাদের ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সার্বিকভাবে চেষ্টা করছেন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সুবিধা নিশ্চিত করতে সবধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।এছাড়া হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইনসহ ওষুধ মজুত রয়েছে। এখন ১২৮ জন ভর্তি রয়েছে এর আগে অনেকেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে গিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ত্রিভুজ প্রেমের বলি নাটোরের চিকিৎসক আমিরুল ইসলাম
হাসপাতাল পরিদর্শনে এসে জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, ‘আমি হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। সঠিক চিকিৎসা প্রদানে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ইতিমধ্যেই। স্থানীয়দের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র ফুটানো পানি পান করতে এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে। ঘটনায় পৌরসভার কোনো গাফিলতি রয়েছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখতে একটি টিম গঠন করা হয়েছে বলে জানান, ডিসি।