নাটকীয়তা, হাড্ডাহাড্ডি আর রুদ্ধশ্বাস এক জয়ের পর নবম কোপা ব্রাজিলের

৩ দিন আগে
অনেক চেষ্টা করেও প্রথমবার শিরোপা জয়ের স্বাদ নেয়া হলো না কলম্বিয়ার। নারী কোপা আমেরিকায় একক আধিপত্য ধরে রাখল ব্রাজিল। ৮ গোলের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর রুদ্ধশ্বাস টাইব্রেকারে জয় তুলে টানা পঞ্চম ও সব মিলিয়ে নবম শিরোপা ঘরে তুলল লা ক্যানারিনহা।

নারী কোপা আমেরিকার ফাইনালে রোববার (৩ আগস্ট) নির্ধারিত সময়ের খেলায় ৪-৪ সমতায় শেষ করে ব্রাজিল ও কলম্বিয়া। এরপর শিরোপা নির্ধারণী টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জয় তুলে নেয় নারী সেলেসাওরা।

 

নারী কোপা আমেরিকা যেন ব্রাজিলের নিজস্ব সম্পত্তি। ২০০৬ সাল বাদ দিয়ে ১০ আসরের সবগুলোতে শিরোপা জিতে নিলো লা ক্যানারিনহা। গত আসরের মতো এবারও কপাল পুড়ল কলম্বিয়ার। টানা দ্বিতীয়বারের মতো রানার-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হলো তাদের। যদিও শিরোপা ভাগিয়ে নিতে চেষ্টার কমতি ছিল না তাদের। নাটকীয়তা, হাড্ডাহাড্ডি, নাভিশ্বাস; এক কথায় রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ উপভোগ করেছে ফুটবলপ্রেমীরা।

 

এদিন বল দখল কিংবা আক্রমণে আধিপত্য ছিল ব্রাজিলের-ই। ৬০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে ২১টি শট নিয়ে ৯টি লক্ষ্য বরাবর রাখে তারা। অন্য দিকে বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও জাল খুঁজে নিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি কলম্বিয়াকে। এদিন শুরুতে লিড পেয়েছিল তারাই। ২৫তম মিনিটে বক্সে ব্রাজিলের পাঁচ ডিফেন্ডারকে দর্শক বানিয়ে রমিজের পাস ছয় গজ দূরত্ব থেকে দেখেশুনে জালে জড়ান স্ট্রাইকার লিন্দা কাইসেদো।

 

আরও পড়ুন: টাইব্রেকারে রুদ্ধশ্বাস জয়ে কোপা আমেরিকার তৃতীয় স্থান আর্জেন্টিনার

 

পেনাল্টি ভাগ্যে প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে সে গোল শোধ করে ব্রাজিল। বক্সে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড জিওভানা হেড নেয়ার সময়ে তার পিঠের উপরে ভর দিয়ে হেড নেন কলম্বিয়ান ডিফেন্ডার জোরেলিন ক্যারাবালি। ভেসে থাকা অবস্থা থেকে দুজনে মাটি পড়ার পর ভিওভানাকে ফের অপ্রয়োজনীয় ধাক্কা দেন ক্যারাবালি।  ভিআর চেক করে রেফারি পেনাল্টির বাঁশি বাজান। সফল স্পটকিকে সেলেসাওদের সমতায় ফেরান মিডফিল্ডার অ্যাঞ্জেলিনা।

 

দ্বিতীয়ার্ধে ডিফেন্ডার তারকিয়ানের আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে পড়ে ব্রাজিল। ৬৯তম মিনিটে প্রতিপক্ষের বাধার মুখে গোলরক্ষককে ব্যাক পাস দিয়েছিলেন এ ডিফেন্ডার। কিন্তু গোলরক্ষক এগিয়ে আসায় সে পাস মিস করেন আর বল প্রবেশ করে গোলবারে। একের পর এক চেষ্টার পর অবশেষে  ৮০তম মিনিটে আমান্দা গুতিয়েরেস দারুণ এক গোলে ফের সমতায় ফেরে লা ক্যারিনহা। আক্রমণে উঠে ডানপ্রান্ত থেকে ক্রস নিয়েছিলেন জিওভানা। বক্সে সেটি বুকে নিয়ে এক ড্রপের পর বাঁ পায়ের কোনাকুনি শটে জালে পাঠান আমান্দা। ৮৮তম মিনিটে কাইসেদোর সঙ্গে দারুণ বোঝাপড়ায় বক্সে পাস পেয়ে কলম্বিয়াকে লিডে ফেরান রমিরেজ। তাতে শিরোপার পথে এক পা দিয়ে রাখে কলম্বিয়া। কিন্তু ভাগ্য যে তাদের পক্ষে ছিল না।

 

বক্সের বাইরে থেকে মার্তার জোরালো শটে ম্যাচে ফেরে সেলেসাওরা। নির্ধারিত সময়ের খেলা ৩-৩ সমতায় শেষ হওয়া ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত মিনিটে। সেখানেও মার্তার বাজিমাত। অ্যাঞ্জেলিনার ক্রস গোলমুখে পেয়ে হেডে জালে জড়ান এ স্ট্রাইকার। তাতে জয়ের পথেই হাঁটছিল ব্রাজিল। কিন্তু ১১৫তম মিনিটে বক্সের বাইরে থেকে দারুণ এক ফ্রি-কিকে কলম্বিয়াকে আরও একবারের জন্য লড়াইয়ে ফেরান লেইসি সান্তোস। নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময় মিলিয়ে ১২০ মিনিটেও শিরোপা ভাগ্য নির্ধারণ না হওয়ায়, ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। এখানেও ছিল পরদে পরদে রোমাঞ্চ আর নাভিশ্বাস।

 

আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ হতে পারেন ব্রাজিলের সমর্থকরা

 

প্রথম দুটি শটে কলম্বিয়া সফল হলেও একটি মিস করে ব্রাজিল। তৃতীয় শটে গিয়ে ফের সমতা হয় দুদলের। চতুর্থ শটে এগিয়ে যায় সেলেসাওরা। পঞ্চম শটে মার্তার মিস আর কাইসেদোর সফলতায় লড়াইয়ে টিকে থাকে কলম্বিয়া। ষষ্ঠ শটে দুদলই সফল হয়। এরপর সপ্তম শটে গিয়ে অ্যাতলেটিকো মাদ্রিদের মিডফিল্ডার লুয়ানি সফল শট নিলেও ব্যর্থ হন ক্যারাবালি। আর তাতেই জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে লা ক্যারিনহা। ১৯৯১-২০০৫; ৩৫ বছরের কোপা আমেরিকার ইতিহাসে ১০ শিরোপার ৯টিই ঘরে তুলে নেয় তারা। ২০০৬ আসর বাদ দিয়ে ২০১০ সাল থেকে টানা পঞ্চম শিরোপা জিতে নিলো তারা।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন