এ আয়াতের ভিত্তিতে হজ ফরজ হয়। এ আয়াত নাজিলের পর রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আবুবকর (রাযি.)-কে আমির নিযুক্ত করে হজ পালন করার জন্য পাঠান। সেবার ৩০০ জন সাহাবি হজ পালন করেছিলেন।
এই হজের সময় সূরা তাওবাহ অবতীর্ণ হয়। ওই সুরায় মুশরিকদের সাথে থাকা শান্তি চুক্তি তারা ভঙ্গ করতে পারে সে ব্যাপারে সতর্ক করেন এবং নির্দেশ দেন আজকের পর থেকে মুশরিকরা হারাম শরিফের সীমানায় প্রবেশ করতে পারবে না এবং কেউ যেন হারাম মাসগুলোতে যুদ্ধের আশঙ্কা না করে।
তাই রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত আলী (রা.)-কে ডাকলেন এবং বললেন, সুরা তাওবায় হজ বিষয়ে যে বিধান ঘোষণা করা হয়েছে, তা মুসলিমদের জানিয়ে দাও। তখন আলী (রা.) মিনায় সমবেত মুসলিমদের মধ্যে মুশরিকদের ব্যাপারে পবিত্র কুরআনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে দেন।
আল্লাহর রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নির্দেশে সেদিন তিনি যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তাতে তিনি বলেছিলেন,
কোনো কাফের জান্নাতে প্রবেশ করবে না। আজকের পর কোনো মুশরিক হজ করতে পারবে না এবং বাইতুল্লাহর তাওয়াফ করতে পারবে না। মুশরিকদের সাথে মুসলিমদের শান্তিচুক্তি ততক্ষণ পর্যন্ত বহাল ছিল যতক্ষণ তারা তা ভঙ্গ করেনি।
এরপর দশম হিজরিতে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজে হজ পালন করেন। তখন লক্ষাধিক সাহাবি হজে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে মত পাওয়া যায়। এটাই ছিল রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কর্তৃক পালনকৃত একমাত্র হজ। হজ থেকে ফিরে তিনি ইন্তেকাল করেন। এ হজে আরাফাতের ময়দানে যে ঐতিহাসিক ভাষণ দেন তাকে বলা হয় বিদায় হজের ভাষণ।
আরও পড়ুন: দেনমোহরের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ পরিমাণ
বিদায় হজের ভাষণে তিনি অন্যায়ভাবে মানুষের রক্তপাত বন্ধ, সুদের কুফল, বর্ণবৈষম্যের ভয়াবহতা, স্বজনপ্রীতির বিরূপ প্রভাব, জাহেলি যুগের মানসিকতা পরিহার করার বিষয়ে জোরালো নির্দেশনা প্রদান করেন। নারীর অধিকার সংরক্ষণ ও তাদের মর্যাদার বিষয় তুলে ধরেন।
সাম্যের ভিত্তিতে শ্রেণিবৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রের সব নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক বিচারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা, শ্রমিকের অধিকার রক্ষা, পরমতসহিষ্ণু হওয়া, সর্বোপরি মানব সভ্যতাবিরোধী সব বর্বরতা পরিহার করে একনিষ্ঠভাবে কোরআন-সুন্নাহ অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন।
]]>