এ ছিল তার শেষ হজ, যা বিদায় হজ নামে পরিচিত। এই ভাষণে তিনি বিশ্ববাসীর জন্য রেখে গেছেন শান্তি, সাম্য ও মানবিকতার শিক্ষা।
চলুন, সেই ঐতিহাসিক ভাষণটির প্রতি ফিরে দেখি।জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আরাফাতের ময়দানে গমন করে নবীজি (সা.) এক বিস্তারিত ও অলংকারপূর্ণ ভাষণ প্রদান করেন, ছিল হিতোপদেশ ও বিধিবিধান সম্বলিত মহান আল্লাহ্ তাআলার সর্বশেষ নবীর সর্বশেষ পয়গাম।
বিশেষ করে এর নিম্ন-বর্ণিত বাণী সমূহ প্রতিটি মুসলমানকে তার হৃদয়-পটে অঙ্কিত করে রাখা উচিত। নবীজি বললেন, হে লোকসকল ! তোমরা আমার কথা শ্রবণ কর, যাতে আমি তোমাদের জন্য যাবতীয় প্রয়োজনীয় বিষয় বলে দিতে পারি। আগামী বছর পুনরায় তোমাদের সঙ্গে মিলিত হতে পারবো কি-না তা আমার জানা নাই।
অত:পর বললেন, তোমাদের নিকট কেয়ামতের দিন পর্যন্ত প্রত্যেক মুসলমানের জানমাল, ইজ্জত-সম্মান ঠিক তেমনিভাবে সম্মানিত যেমনিভাবে আজকের (আরাফার) এই দিন, এই (জিলহজ) মাস এবং এই (মক্কা) নগরী তোমাদের কাছে সম্মানিত। এইজন্য কারো কাছে কারো কোনো আমানত থাকলে তা অবশ্যই আদায় করে দিবে।
অতঃপর বললেন, হে লোকসকল ! তোমাদের উপর তোমাদের স্ত্রীগণের কিছু অধিকার আছে। তাদের উপরও তোমাদের কিছু অধিকার আছে। তোমরা সকলেই পরস্পর ভাই ভাই। কারো জন্য তার ভাইয়ের মাল তার অনুমোদন ছাড়া হালাল হবে না। আমার পরে তোমরা কাফের হয়ে যেয়ো না। এবং একে অন্যকে হত্যা করিও না।
আরও পড়ুন: সৌদি পৌঁছেছেন ৮৭ হাজার ১৫৭ হজযাত্রী
আমি তোমাদের জন্য আমার পরে আল্লাহর কিতাব রেখে যাচ্ছি। যদি তোমরা এর নির্দেশাবলি শক্তভাবে আঁকড়ে ধরো, তাহলে কখনও তোমরা পথভ্রষ্ট হবে না।
অতঃপর বললেন, হে লোকসকল ! তোমাদের পালনকর্তা এক, তোমাদের পিতা এক, তোমরা সকলে এক আদমের সন্তান এবং আদম মাটি হতে সৃষ্ট। তোমাদের মধ্যে সে-ই সর্বাপেক্ষা অধিক সম্মানিত, যে সর্বাপেক্ষা শতাধিক খোদা-ভীরু। কোন আরব কোন অনারবের উপর খোদা-ভীরুতা ব্যতীত শতাধিক মর্যাদাবান ও সম্মানী হতে পারে না। মনে রেখো, আমি আল্লাহর বাণী তোমাদের নিকট পৌঁছে দিয়েছি।
হে আল্লাহ ! তুমি সাক্ষী আছো যে, আমি তোমার বাণী পৌঁছে দিয়েছি। উপস্থিত লোকদের উচিত, তা যেন অনুপস্থিতদের নিকট আমার এই সমস্ত বাণী পৌঁছে দেয়।
শিক্ষার্থী : জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ, ঢাকা