নবীজির দেখানো পথই মুক্তির পথ

৬ দিন আগে
মানবজীবনের সফলতা, শান্তি ও মুক্তির একমাত্র পথ হলো নবী করিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লা-এর দেখানো পথ অনুসরণ করা। তার জীবন ছিল আল্লাহর নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালিত সর্বোত্তম জীবনব্যবস্থা। কুরআনুল কারিমে আল্লাহ তাআলা বহুবার নির্দেশ দিয়েছেন যেন মানুষ রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্য করে, তার আদর্শ অনুসরণ করে, তার পথকে নিজের জীবনের পথ হিসেবে গ্রহণ করে। যে জাতি নবীর সুন্নাহ আঁকড়ে ধরে, তারা কখনো পথভ্রষ্ট হয় না; আর যে জাতি তা থেকে বিমুখ হয়, তারা ধ্বংসের দিকে ধাবিত হয়।

নবীর আনুগত্য মানেই আল্লাহর আনুগত্য

 

যে ব্যক্তি রসুলের আনুগত্য করল, সে আল্লাহরই আনুগত্য করল।  (সুরা নিসা:৮০) এই আয়াত স্পষ্ট করে দেয়, আল্লাহর সন্তুষ্টি ও মুক্তি লাভের পথ নবীজির আনুগত্য ছাড়া অন্য কোনো পথে সম্ভব নয়। যে ব্যক্তি রসুলের বিরোধিতা করে এবং মুমিনদের পথ ছাড়া অন্য পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সেই পথেই যেতে দেব যা সে বেছে নিয়েছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। (সুরা নিসা:১১৫) এখানে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে,রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথ থেকে বিচ্যুতি মানে ধ্বংস ও পতন।

 

সফলতার নিশ্চয়তা

 

তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও রসুলের আনুগত্য করবে, আল্লাহ তাদেরকে তাদের মধ্যে প্রবেশ করাবেন এমন জান্নাতে, যার নিচ দিয়ে নদী প্রবাহিত হবে। (সুরা নিসা:১৩) অতএব, আল্লাহর সন্তুষ্টি, জান্নাত ও পরকালীন মুক্তি, সবকিছুই নির্ভর করছে রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আনুগত্যের ওপর।

 

নবীজির পথই মুক্তির পথ

 

রসুল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

 

كُلُّ أُمَّتِي يَدْخُلُونَ الْجَنَّةَ إِلَّا مَنْ أَبَى قِيلَ: وَمَنْ يَأْبَى يَا رَسُولَ اللَّهِ؟ قَالَ: مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الْجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أَبَى আমার সকল উম্মাত জান্নাতে যাবে, যে অস্বীকার করবে সে ব্যতীত। জিজ্ঞেস করা হলো, কে অস্বীকার করবে? তিনি বললেন, যারা আমার আনুগত্য স্বীকার করেছে তারা জান্নাতে যাবে। আর যে ব্যক্তি আমার অবাধ্য হলো সে-ই অস্বীকার করলো (সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে) (সহিহ বুখারি:৭২৮০) 

 

এই হাদিস স্পষ্টভাবে প্রমাণ করে, নবীজির দেখানো পথই মুক্তি ও জান্নাতের নিশ্চয়তা দেয়, আর তার সুন্নাহ থেকে বিমুখতা মানে ধ্বংস ও বিচ্যুতি। যে যুগে মুসলমানরা নবীজির সুন্নাহ আঁকড়ে ধরেছে,যেমন খোলাফায়ে রাশেদিনের যুগ, তাবেয়িন ও তাবেতাবেয়িনদের যুগ,তখন তারা ছিল দুনিয়ার নেতৃত্বের আসনে। সমাজে ছিল শান্তি, ন্যায়বিচার, ও নৈতিকতা। আর যখন মুসলমানরা সুন্নাহ থেকে দূরে সরে গেছে, তখন শুরু হয়েছে আত্মিক শূন্যতা, বিভাজন ও নৈতিক অবক্ষয়।

 

আমাদের বাস্তবতা ও করণীয়

 

আজ আমরা নবীজির সুন্নাহ থেকে যত দূরে যাচ্ছি, ততই হারাচ্ছি শান্তি, আখলাক ও ঐক্যের শক্তি। আমাদের শিক্ষা, সংস্কৃতি, আচরণ,সবকিছুতে যদি নবীজির আদর্শ ফিরিয়ে আনা যায়, তবে সমাজে আবার নেমে আসবে নুরের আলো, মুছে যাবে অবক্ষয়ের অন্ধকার। আমাদের প্রত্যেকের উচিত নবীজির জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া, নম্রতা, ন্যায়পরায়ণতা, পরোপকারিতা, পরিবারে দয়া, সমাজে দায়িত্ববোধ,এই সবই তার সুন্নাহর বাস্তব রূপ।

 

কুরআন ও সুন্নাহকে আঁকড়ে ধরলেই আমরা ফিরে পাব আমাদের হারানো মর্যাদা, শান্তি ও সফলতা। আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে নবীজির দেখানো পথে চলার তাওফিক দান করুন। তোমরা আল্লাহ ও তার রসুলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও। (সুরা আল ইমরান:১৩২)

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন