নবম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের

৪ সপ্তাহ আগে
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মাঠ পর্যায়ের উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের দশম থেকে নবম গ্রেডে উন্নীত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অ্যাসোসিয়েশন।

শনিবার (১৬ আগস্ট) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য সচিব আল আমিন হাওলাদার।

 

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে সংশোধিত নিয়োগবিধি অনুযায়ী পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীত করা হয়। দীর্ঘ ৩১ বছর ধরে উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদটি ১০ম গ্রেডেই অপরিবর্তিত রয়েছে, যা আমাদের জন্য সত্যি হতাশাব্যঞ্জক ও বৈষম্যমূলক।

 

আল আমিন হাওলাদার বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদটি তৎকালীন ১৭তম গ্রেডে এবং সহকারী শিক্ষক পদটি ১৮তম গ্রেডে ছিল। প্রধান শিক্ষক পদটি কয়েক দফায় উন্নীত হয়ে ২০১৪ সালে ১১তম গ্রেডে এবং সম্প্রতি উচ্চতর আদালতের রায়ে ১০ম গ্রেডে উন্নীত করার সব প্রক্রিয়া সমাপ্তের পথে। সহকারী শিক্ষক পদটিও চার দফায় উন্নীত হয়ে ২০২০ সালে ১৩তম গ্রেডভুক্ত হয়। এরইমধ্যে এই দফতরের জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও পিটিআই সুপারিনটেনডেন্ট পদটি ৯ম গ্রেড থেকে ৬ষ্ঠ গ্রেডে এবং পিটিআই ইন্সট্রাক্টর পদটি ৩য় শ্রেণি থেকে ১ম শ্রেণিতে (৯ম গ্রেড) উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য দফতরের সম-গ্রেডের কর্মকর্তারা ১০ম গ্রেড থেকে ৯ম গ্রেডে উন্নীত হয়েছেন।

 

আরও পড়ুন: এক বছরে জনপ্রশাসনে নিয়মিত পদোন্নতি ৭৮৫, ভূতাপেক্ষ ৭৬৪ জনের

 

তিনি জানান, বর্তমানে উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অনুমোদিত পদসংখ্যা ২ হাজার ৬২৯টি। এই পদের অব্যবহিত ঊর্ধ্বতন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদসংখ্যা ৫১৬টি। উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদ সংখ্যা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের পদ সংখ্যার পাঁচগুণেরও বেশি। বর্তমান নিয়োগবিধি অনুযায়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার পদের ৫০ শতাংশ হিসাবে মাত্র ২৫৮টি পদে অর্থাৎ প্রতি ১০ জনে ১ জন পদোন্নতির সুযোগ পাচ্ছেন। ফলে উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসাররা দীর্ঘ ২৫ থেকে ৩০ বছর যাবত একই পদে চাকরি করছেন, এমনকি অধিকাংশ কর্মকর্তা একই পদে থেকে অবসরে যাচ্ছেন। ফলে তাদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি হচ্ছে এবং কর্মস্পৃহা হ্রাস পাচ্ছে। পদমর্যাদা বৃদ্ধি করা হলে দীর্ঘদিনের লালন করা প্রত্যাশা অনেকাংশে পূরণ হবে এবং কর্মোদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের সর্বোচ্চ সংখ্যক এই অফিসারদের মনে পুঞ্জিভূত বৈষম্যমূলক বঞ্চনাবোধের অবসান হবে।

 

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদটি ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য আদালত চূড়ান্ত রায় দেন। সেই আলোকে প্রধান শিক্ষককে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণে প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। কিন্তু একজন উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের অধীন প্রায় ৩০ জন ১০ম গ্রেডভুক্ত প্রধান শিক্ষক এবং ১৬০-২০০ জন ১৩তম গ্রেডভুক্ত সহকারী শিক্ষক থাকেন। এই শিক্ষকদের প্রশাসনিক ও একাডেমিক তত্ত্বাবধান, মেন্টরিং, মনিটরিং, এসিআর ও ছুটি প্রদানকারী কর্মকর্তা হলেন উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার। এক্ষেত্রে উপজেলা বা থানা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এবং প্রধান শিক্ষক একই গ্রেড হওয়াতে প্রশাসনিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এ পদটি ৯ম গ্রেডে উন্নীত করা একান্ত প্রয়োজন।

 

আরও পড়ুন: ব্যাংকে পদোন্নতির জন্য তদবির ‘অসদাচরণ’ হিসেবে দেখবে সরকার, নতুন নীতিমালা জারি

 

‘দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণকল্পে এবং যৌক্তিক বিবেচনায় গ্রেড ১০ম হতে ৯ম গ্রেডে উন্নীত করার দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ও সচিব, জনপ্রশাসন উপদেষ্টা ও সিনিয়র সচিব এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালকের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি’, যোগ করেন আল আমিন হাওলাদার।

 

এ সময় আহ্বায়ক মুহাম্মদ মিলন মিয়া, যুগ্ম আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলামসহ অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন