ক্যালেন্ডারের পাতায় ডেঙ্গুর মৌসুম শেষ হলেও ফুরায়নি এর ভয়াবহতা। প্রতিদিনই বাড়ছে সংক্রমণ আর মৃত্যুর হার। দেশে ডেঙ্গুর যখন এমন চিত্র, তখনই আতঙ্কে নতুন মাত্রা যোগ করেছে চিকুনগুনিয়া ও জিকা ভাইরাস। আইইডিসিআর গত তিন মাসের পরীক্ষায় ডেঙ্গুর সঙ্গে পেয়েছে বাকি দুটি ভাইরাসও। তবে স্বস্তির খবর হলো চিকিৎসার পর সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
দক্ষিণ আমেরিকা থেকে ছড়িয়ে পড়া জিকা ভাইরাস নিয়ে এরই মধ্যে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও। সংস্থাটি বলছে, এটি প্রতিরোধে এখনই ব্যবস্থা নিতে হবে।
এডিস মশাবাহিত অন্যান্য ভাইরাসের তুলনায় জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের হার কম হলেও এ ভাইরাসের প্রধান শিকার গর্ভবতী মা এবং তার অনাগত সন্তান। চিকিৎসকরা বলছেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মৃত্যুও হতে পারে গর্ভের নবজাতকের।
আরও পড়ুন: শীতের যত রোগ
জিকার চিকিৎসা মূলত উপসর্গভিত্তিক। তাই প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধে সচেতন থাকার প্রতি জোর দিচ্ছেন বিশেজ্ঞরা। তারা বলছেন, ব্যবস্থা নিতে হবে এডিস নিধনের। এক মশা নিধন করতে পারলেই প্রতিরোধ সম্ভব তিন রোগের।
আইইডিসিআরের ভাইরোলজি বিভাগের ডা. মো. আব্দুল্লাহ ওমর নাসিফ সময় সংবাদকে বলেন,
জিকার ক্ষেত্রে সামান্য লক্ষণ থাকে। সাধারণত ২ থেকে ৪ দিন জ্বর থাকে। কারও কারও ক্ষেত্রে র্যাশ থাকে। হালকা ব্যথা থাকে। লক্ষণগুলো তাড়াতাড়ি সেরে যায়।
আর আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, ‘ঢাকা শহরের কিছু বড় হাসপাতালে এ রোগের চিকিৎসার সক্ষমতা আছে। সব সময় ল্যাবরেটরি পরীক্ষার ওপর নির্ভর করতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। যেহেতু সব জায়গায় সক্ষমতা নেই, তাই আমাদেরকে উপসর্গেরওপর নির্ভর করেও রোগ নির্ণয়ের চেষ্টা করতে হবে।’
আরও পড়ুন: দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে এইডসে আক্রান্ত রোগী
মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মোহাম্মদ হাসনাত বলেন,
মশা নিধন কর্মসূচিকে বেগবান করতে সিটি করপোরেশন, উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদকে আরও এগিয়ে আসতে হবে। খুব দ্রুত মশা নিধন করা গেলে রোগগুলোর প্রকোপ কমে যাবে।
জিকা ভাইরাসে এখনও কারো মৃত্যু না হলেও তিন ভাইরাস একসঙ্গে ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ বাড়ছে কিছুটা। কিন্তু যার জন্য ছড়াচ্ছে এ আতঙ্ক, সে এডিস মশা যেন উড়ে বেড়াচ্ছে এখনও নিশ্চিন্তে।
এক ঢিলে দুই পাখি মারার বাংলা প্রবাদকে ছাড়িয়ে গেছে এডিস মশা। এক এডিস মশাই ছড়াচ্ছে তিন ব্যাধি। বছরের পর বছর ক্ষুদ্র কীটটি তার ভয়াবহ রূপ দেখাচ্ছে। প্রথমে ডেঙ্গু, এরপর চিকনগুনিয়া, এবার জিকা ভাইরাস। আর কত ভয়াবহতা দেখানোর পর এ মশা নিধন সম্ভব, জানা আছে কী এই প্রশ্নের উত্তর?
]]>