কৃষি প্রধান জেলা গাইবান্ধায় এখন মাঠের পর মাঠ পাকা ও আধা পাকা ইরি বোরো ধান দোল খাচ্ছে। অনেক এলাকায় শুরু হয়েছে ফসল কর্তন। কিন্তু ধান পাকার শেষ মুহূর্তে এসে মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণে নষ্ট হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ দিয়ে চাষ করা কষ্টের ফসল।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ঝিনাশ্বর এলাকার কৃষক মাসুদ মুসকুরী। ৭ বিঘা জমিতে করেছেন চলতি ইরি-বোরো ধানের চাষ। ফলনও হয়েছিল ভালো, কিন্তু ধান পাকার শেষ মুহূর্তে এসে তার প্রায় ৩ বিঘা জমিতে ধরেছে মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে জমিতেই শেষ হয়েছে কষ্টের ফসল। একাধিকবার ওষুধ স্প্রে করেও কোন লাভ হয়নি ক্ষেতের।
আরও পড়ুন: দিনাজপুর / বোরো ধানে মাজরা পোকার হানা, উৎপাদন নিয়ে শঙ্কায় চাষিরা
ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. মাসুদ মুসকুরী জানান, বিভিন্ন দোকান থেকে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে কোন কাজ হয়নি। ৩ বিঘা জমির ধান সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে, জমির পল পর্যন্ত কাজে লাগানো যাবে না।
মাসুদ মুসকুরীর মতো একই অবস্থা ওই এলাকার কৃষকদের। সদর উপজেলার খোলাহাটি, কুপতলা, বল্লমঝাড় ইউনিয়ন ছাড়াও জেলার বিভিন্ন এলাকার আধা পাকা ধানের জমিতে দেখা দিয়েছে মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ। মাজরা ও কারেন্ট পোকা ধান গাছের মাজা কেটে দেয়ায় শুকিয়ে বিবর্ণ হয়ে মারা যাচ্ছে ধান গাছ। যে জমিতে এই পোকা আক্রমণ করে সর্বোচ্চ ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে সে জমির অধিকাংশ গাছ নষ্ট করে দেয়।
মাজরা পোকার আক্রমণে বিঘা পর বিঘা জমির আধা পাকা ধান গাছ নষ্ট হলেও কোন প্রতিকার করতে পারছেন না কৃষকরা। একাধিকবার বিভিন্ন কীটনাশক ব্যবহার করলেও হচ্ছে না কোনো সমাধান। চোখের সামনে নষ্ট হচ্ছে কষ্টের ফসল।
সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের ঝিনাশ্বর এলাকার কৃষক সুমন মিয়া জানান, ধান কাটার আগ মুহূর্তে জমিতে কারেন্ট পোকা দেখা দেয়। ৩/৪ দিনের মধ্যে জমির সব ধান গাছ সাদা হয়ে ধান চিঠা হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: বৈরী আবহে ফসলে চিটা, কষ্টের ধানেও লাভের আশা ক্ষীণ
গাইবান্ধা সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শাহাদত হোসেন জানান, বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন এলাকায় মাজরা ও কারেন্ট পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। ক্ষতি ও আক্রান্ত ধান ক্ষেতের পরিমাণ নিরুপণে কাজ চলছে। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিতে মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তারা কাজ করছে।
চলতি মৌসুমে গাইবান্ধা সদর উপজেলায় ২১ হাজার ২৯৬ হেক্টরসহ জেলায় ১ লাখ ২৯ হাজার ২০ হেক্টর জমিতে ইরি বোরো ধানের চাষ হয়েছে। চাল উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ৭৫ হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন।
]]>