ঘটনাটি ঘটেছে রোববার (৮ জুন) ঈদের পরদিন। মাসুদের বাড়ি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামে।
জানা যায়, ওই দিন সকাল ১০টায় ঢাকা মাজার রোড থেকে দর্শনাগামী পুর্বাশা পরিবহনের একটি এসি বাস ছেড়ে যায়। গন্তব্যভেদে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া নেয়া হয় ১ হাজার ৪০০ টাকা। কিন্তু যাত্রার শুরু থেকেই বাসটির এসি কাজ করেনি। যাত্রীরা একাধিকবার অভিযোগ করলেও বাস কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত করেনি এবং টাকা ফেরতের অনুরোধও প্রত্যাখ্যান করেছে।
যাত্রী কাজী মিনহা ইসলাম সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টে জানান, পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় ফেরিতে ওঠার পর বাসটির ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যায় এবং প্রায় আড়াই ঘণ্টা তীব্র রোদে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। বাসের জানালা খোলা না যাওয়ায় যাত্রীরা একপ্রকার দমবন্ধ অবস্থায় ছিলেন। এ সময় ৬০ বছর বয়সি ওমেদুল ইসলাম মাসুদ প্রচণ্ড গরম ও হিটস্ট্রোকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। যাত্রীদের বারবার অনুরোধ সত্ত্বেও এসি চালানো সম্ভব হয়নি, এবং বাসেই তার মৃত্যু ঘটে।
আরও পড়ুন: ঝিনাইদহে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১
রিয়াদ খান নামে আরেক যাত্রী অভিযোগ করেন, ‘বাসে ওঠার পরই দেখা যায় এসি চলে না। রাস্তায় দুবার গাড়ি নষ্ট হয়েছে। টাকা ফেরতের দাবি করলেও পরিবহন কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দেয়নি। বহুবার গাড়ি পরিবর্তনের অনুরোধ করা হলেও তারা তাতে সাড়া দেয়নি। এই অবহেলাতেই একজন মানুষ মারা গেল। এর পূর্ণ দায়ভার পুর্বাশা পরিবহনের জিএম ও ম্যানেজমেন্ট রমজানকে নিতে হবে।’
মাসুদের ভাই আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বাসের অব্যবস্থাপনার কারণেই আমার ভাই মারা গেছে। আমি চাই, আর কোনো যাত্রী যেন এভাবে না মারা যায়।’
মৃতের বোনজামাই শফিক আকরাম বলেন, ‘বাস কর্তৃপক্ষের এমন অব্যবস্থাপনার কারণে একজন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।’
যাত্রীরা একে কেবল অব্যবস্থাপনা নয়, বরং অপরাধমূলক গাফিলতি হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, ‘আমরা টাকা দিয়েছিলাম স্বস্তির জন্য, কিন্তু পেয়েছি মৃত্যুকূপ।’
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুর্বাশা বাস কর্তৃপক্ষ কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।
]]>