বসতভিটা হারিয়ে দিশেহারা মানুষ
ভাঙনের হুমকিতে শেষ সম্বল সরিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন অনেকে। হাঁস-মুরগি, গরু-ছাগল নিয়ে রাত-দিন আতঙ্কে রয়েছেন ঘিওর, মাইলাগী, বৈলট, কুশন্ডা ও পেচারকান্দাসহ আশপাশের গ্রামবাসী। বাড়িঘর হারিয়ে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছেন নদীপাড়ের মানুষ।
মরিয়ম বেগম নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘কয়েকবার ভাঙনে বাড়ি হারিয়ে আবারও নদীর ধারে ঘর তুলেছিলাম। সেটাও এখন ভেঙে যাচ্ছে। সরানোর মতো সময় পাচ্ছি না। অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটছে। রাতে ভাঙন আরও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে, তাই ঘুমাতেও পারি না।’
উত্তর ঘিওরের আয়েশা বেগম জানান, নদীতে তার প্রায় সব ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এখন একটি মাত্র ঘর বাকি আছে। সেটি রক্ষার জন্য কাঠমিস্ত্রি না পেয়ে একাই ভাঙার কাজ শুরু করেছেন তিনি।
‘শেষ সম্বলটুকু বাঁচাতে ব্যস্ত ছেলেপুলে সবাই, তাই কথা বলারও সময় নেই’ বলেন তিনি।
চলাচলে চরম ভোগান্তি
আকরাম হোসেন নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, ঘিওর থেকে পেচারকান্দা পর্যন্ত রাস্তার পূর্বপাড়া অংশ ভেঙে যাওয়ায় ১০টি গ্রামের মানুষ অনেক কষ্টে ঘুরপথে যাতায়াত করছেন। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রশাসনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালেও কোনো লাভ হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: নদীগর্ভে বিলীন তিস্তা সেতু রক্ষার ১০০ মিটার বাঁধ, হুমকিতে তিন গ্রাম
স্থানীয় রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ভাঙন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাইকে জানানো হয়েছে। কিন্তু গরিবের কথা কে শোনে? এখন ১০টি গ্রামের মানুষকে কমপক্ষে ৩ কিলোমিটার হেঁটে শহর বা উপশহরে যেতে হয়।’
ক্ষতির পরিমাণ
স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের তিন দিনের ভাঙনে ঘিওর থেকে পেচারকান্দা পর্যন্ত প্রায় ৫০০ মিটার এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। এ সময় নদীগর্ভে চলে গেছে ১৫টি বসতবাড়ি ও প্রায় ১০ হেক্টর ফসলি জমি।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাছে বারবার জানালেও এখনো কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে প্রতিদিন ধলেশ্বরীর স্রোতে ভাঙছে রাস্তা, বসতবাড়ি আর কৃষিজমি।