ধর্ষণের আলামত নষ্টের অভিযোগে ওসির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা

১ দিন আগে
বগুড়ার ধুনটে বহুল আলোচিত স্কুলছাত্রী ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ মামলায় মুরাদুজ্জামান মুকুল এবং মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগে সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, ধুনট উপজেলার শৈলমারি গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে এবং জালশুকা হাবিবর রহমান ডিগ্রী কলেজের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিষয়ের প্রভাষক মুরাদুজ্জামান ওরফে মুকুল (৪৮) এবং গাজিপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২ এ কর্মরত ধুনট থানার সাবেক ওসি কৃপা সিন্ধু বালা (৫১)।


বুধবার (৮ অক্টোবর) দুপুরে বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর বিচারক মো. জিয়া উদ্দিন মাহমুদ মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ২ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেন। এরআগে মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআই এর পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে ১ হাজার ৫০০ পাতার চার্জশিট দাখিল করেন। বগুড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এর পিপি এডভোকেট মো. মোজাম্মেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আরও পড়ুন: ফরিদপুরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের দায়ে যুবকের আমৃত্যু কারাদণ্ড

মামলা সূত্রে জানা যায়, ধুনট পৌর এলাকার অফিসার পাড়ার কলেজ শিক্ষক দম্পতির স্কুলপড়ুয়া মেয়েকে ২০২২ সালের ১২ এপ্রিল ধর্ষণ ও সেই দৃশ্য নিজের মুঠোফেনে ভিডিও ধারণ করে মুরাদুজ্জামান। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা বাদি হয়ে ২০২২ সালের ১২ মে ধুনট থানায় মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন ধুনট থানার তৎকালীন ওসি কৃপা সিন্ধু বালা। ওই মামলায় মুরাদুজ্জামানকে গ্রেফতারকালে জব্দকৃত মুঠোফোনে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ভিডিও ধারণের প্রমান পান পুলিশ। কিন্ত মামলা তদন্তকালে ওসি কৃপা সিন্ধু বালা আসামির কাছ থেকে মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে জব্দকৃত মুঠোফোন থেকে ধর্ষণের ভিডিওসহ বেশকিছু আলামত নষ্ট করে।


বিষয়টি বুঝতে পেরে পুলিশ সুপারসহ বিভিন্ন দপ্তরে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন মামলার বাদী। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে ধুনট থানা থেকে প্রত্যাহার করে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেন জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখায়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিবর্তন হয়ে বগুড়া পিবিআই’র এসআই সবুজ আলীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে ওসি কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে মামলার সাক্ষীরা মৌখিক ও লিখিত সাক্ষ্য দেন।

আরও পড়ুন: ঝালকাঠিতে ধর্ষণ মামলায় কিশোর গ্রেফতার

কিন্তু সাক্ষীদের দেওয়া প্রকৃত সাক্ষ্য গোপন করে এসআই সবুজ আলী মনগড়াভাবে ওসি কৃপা সিন্ধু বালাকে মামলায় অন্তর্ভুক্ত না করে ২০২৪ সালের ২৪ মার্চ আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ অবস্থায় মামলার বাদির নারাজীর আবেদেন ২০২৪ সালের ১৫ আগস্ট মঞ্জুর করে সম্পূরক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বগুড়া পিবিআই-কে নির্দেশ দেন আদালত। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ৬ বার পরিবর্তনের পর অবশেষে বগুড়া পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সাক্ষ্য প্রমাণে প্রাথমিকভাবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় ধর্ষণ মামলার এজাহার নামীয় আসামি মুরাদুজ্জামানের বিরুদ্ধে চার্জশিট এবং মামলার আলামত নষ্ট করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় কৃপা সিন্ধু বালার বিরুদ্ধে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন