প্রতিষ্ঠানটির এক পর্যালোচনায় সতর্কতা উচ্চারণ করে বলা হয়েছে, ‘অসংখ্য প্রমাণে দেখা যাচ্ছে যে, ব্যাপক অনাহার, অপুষ্টি ও বিভিন্ন রোগ থেকে ক্ষুধাজনিত মৃত্যুর হার বাড়ছে’।
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘সর্বশেষ তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে, গাজা উপত্যকার বেশিরভাগ অংশ দুর্ভিক্ষের সীমায় পৌঁছেছে এবং গাজা সিটিতে মারাত্মক অপুষ্টি দেখা দিয়েছে।’
আইপিসি হলো দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি চিহ্নিত করার জন্য জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা, ত্রাণ সহায়তা গোষ্ঠী এবং সরকারগুলোর একটি বিশ্বব্যাপী উদ্যোগ।
গত মে মাসে আইপিসি বলেছিল, গাজার প্রায় ২১ লাখ ফিলিস্তিনি দুর্ভিক্ষের ‘গুরুতর ঝুঁকিতে’ রয়েছে এবং ‘চরম খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার’ মুখোমুখি হয়েছে। আইপিসি আরও জানায়, তাদের এই সতর্কতা গাজায় দুর্ভিক্ষের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করছে না। তারা এ বিষয়ে আরও বিশ্লেষণ করবে।
আরও পড়ুন: গাজায় গণহত্যা চালাচ্ছে ইসরাইল, অভিযোগ ইসরাইলি মানবাধিকার গোষ্ঠীর!
চলতি বছরের মার্চ মাসে ইসরাইল গাজায় সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করে। ফলে খাদ্য সংকট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দেখা দিয়েছে ক্ষুধা ও দুর্ভিক্ষ। লাখ লাখ মানুষ অনেকদিন ধরে না খেয়ে আছে। দিনের পর দিন অনাহারে মরছে মানুষ।
আল জাজিরার প্রতিবেদন মতে, মঙ্গলবার পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহারে অন্তত ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এদের মধ্যে দুজনই শিশু। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে সংঘাত শুরুর পর অপুষ্টিজনিত কারণে এখন পর্যন্ত ১৪৭ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে ৮৮ জনই শিশু।
এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে পড়ে গত শনিবার (২৬ জুলাই) গাজায় বিমান থেকে কিছু ত্রাণ ফেলে ইসরাইল। এর সঙ্গে যোগ দেয় মধ্যপ্রাচ্যের দুই মুসলিম দেশ জর্ডান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।
আরও পড়ুন: গাজায় ২১ মাসে ৬০ হাজার ফিলিস্তিনিকে হত্যা!
পাশাপাশি রোববার (২৭ জুলাই) গাজা উপত্যকার কিছু জায়গায় চলমান যুদ্ধে ‘সামরিক বিরতি’ ঘোষণা করেছে ইসরাইল। তারা বলেছে, এতে গাজায় ক্ষুধার সমস্যা মেটাতে জাতিসংঘ ও ত্রাণ সংস্থাগুলো সড়কপথে নিরাপদে খাবার ও সহায়তা পাঠাতে পারবে।
ইসরাইলের এসব পদক্ষেপকে স্বাগত জানালেও তা প্রয়োজনীয় ত্রাণের তুলনায় ‘খুবই সামান্য’ বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ। বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘গতকালের ত্রাণ বিতরণ ছিল একটি ভালো শুরু। কিন্তু গাজার বেসামরিক জনগণের যা প্রয়োজন তার তুলনায় এটা সমুদ্রের এক ফোঁটা পানির সমান।’