দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত রুহুল আমিনের বাড়িতে চলছে মাতম

২ সপ্তাহ আগে
অসুস্থ বাবার জন্য ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফেরা হলো না ছেলে রুহুল আমিনের। দুর্বৃত্তদের গুলিতে প্রাণ হারাতে হলো এই যুবককে। মঙ্গলবার রাতে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার রুস্তমপুর গ্রামের সমিতির ব্রিজ এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

বুধবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব জানান, ঘাতকদের দুজনের একজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তারা দ্রুত পালিয়ে যায় পাশের জেলা লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে। সেখান থেকে তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাস্থলের পাশ থেকে একটি হেলমেট ও একজোড়া স্যান্ডেলও জব্দ করেছে পুলিশ।

 

পুলিশ সুপার বলেন, হত্যাকাণ্ডটি ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে না পূর্ব শত্রুতার জেরে তা নিশ্চিত হতে তদন্ত চলছে। ঘাতকদের আটকে পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালাচ্ছে।

 

নিহত রুহুল আমিন (৩৫) স্থানীয় প্রতিষ্ঠান বেঙ্গল টি'র বিক্রয়কর্মী ছিলেন। তিনি ফরিদগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব বড়ালী এলাকার স্কুল শিক্ষক হোসেন আলীর ছেলে। চার ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয় রুহুলের স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তান রয়েছে।

 

বাবা হোসেন আলী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘রাতে আমার জন্য ওষুধ আনার কথা ছিল ওর। এখন কে আমাকে বাবা বলে ডাকবে!’ স্ত্রী সোনিয়া আক্তার বলেন, ‘আমার ছোট ছোট সন্তানদের এতিম করে চলে গেলো সে। স্বামী হত্যায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার চাই।’

 

সহকর্মীরা জানান, কাতার প্রবাস থেকে দেশে ফিরে কয়েক বছর আগে বেঙ্গল টিতে চাকরি নেন রুহুল আমিন।

 

আরও পড়ুন: গুলিতে নিহত মামুন এসেছিলেন হত্যা মামলার হাজিরা দিতে

 

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে ফরিদগঞ্জের গৃদকালিন্দিয়া বাজার থেকে চা-পাতা বিক্রির টাকা সংগ্রহ শেষে মোটরসাইকেলে ফিরছিলেন রুহুল। রাত ১০টার দিকে বারপাইকা এলাকায় অস্ত্রধারী দুই যুবকের কবলে পড়েন তিনি। তারা এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার পর পালিয়ে গেলে ওই ব্যক্তি চিৎকার করে ধাওয়া দেন। একপর্যায়ে রুস্তমপুর সমিতির ব্রিজের কাছে পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা রুহুলকে গুলি করে হত্যা করে পালিয়ে যায়।

 

খবর পেয়ে ফরিদগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে। নিহতের মোটরসাইকেল ও ব্যক্তিগত সামগ্রীও জব্দ করা হয়। চাঁদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশন) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ‘ঘটনার পরপরই ৯৯৯-এ ফোন আসে। আমরা তাৎক্ষণিক অভিযান শুরু করি।’

 

রাতেই পুলিশ সুপার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলেন। বুধবার দুপুরে নিহতের মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারকে হস্তান্তর করা হয়।

 

ফরিদগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহ আলম জানান, পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন