দুই ছাত্রের গায়েবানা জানাজায় চোখের জলে প্রার্থনা, শোকাচ্ছন্ন চবি

৪ সপ্তাহ আগে
চোখের জলে ভেজা মুখ, নিঃশব্দ প্রার্থনায় ভারী বাতাস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই মেধাবী শিক্ষার্থী কে. এম. সাদমান রহমান সাবাব ও আসিফ আহমেদের গায়েবানা জানাজায় এমনই ছিল পরিবেশ। প্রাণচঞ্চল ক্যাম্পাস আজ যেন থমকে গিয়েছিল এক নির্মম বাস্তবতায় কক্সবাজারের হিমছড়িতে ঘুরতে গিয়ে সমুদ্রে ডুবে প্রাণ হারানো ও নিখোঁজ স্বপ্নবান তিন তরুণের শোকে ডুবে ছিল পুরো বিশ্ববিদ্যালয়।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের দুই মেধাবী শিক্ষার্থী কে. এম. সাদমান রহমান সাবাব ও আসিফ আহমেদের মাগফিরাত কামনায় বুধবার (৯ জুলাই ২০২৫) বাদ যোহর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ মাঠে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও শুভানুধ্যায়ীদের অংশগ্রহণে এক আবেগঘন পরিবেশে সম্পন্ন হয় এই জানাজা।


গায়েবানা জানাজায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন।


জানাজার পূর্বে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) নিহতদের স্মরণ করে বলেন, আমাদের শিক্ষার্থীরা জাতির ভবিষ্যৎ। তাদের এমন অপূরণীয় ক্ষতি বিশ্ববিদ্যালয় তথা গোটা জাতির জন্য শোকাবহ।তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি গভীর সমবেদনা জানান এবং সতর্কভাবে জীবন পরিচালনার গুরুত্বারোপ করেন।


ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের সভাপতি মোহাম্মদ সোহাইব সকলের কাছে নিহতদের জন্য দোয়া কামনা করেন এবং তাদের সকল ভুলত্রুটিকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার আহ্বান জানান।

আরও পড়ুন: ১১৭ কিলোমিটার সৈকতই ঝুঁকিপূর্ণ, কক্সবাজারে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল

জানাজায় আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ ফরহাদ হোসেন হলের প্রভোস্ট প্রফেসর ড. মো. আবদুল মান্নান, আবাসিক শিক্ষকবৃন্দ, অতিস দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান হলের প্রভোস্ট এ.জি.এম. নিয়াজ উদ্দিন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ, ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. মো. আনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও ছাত্র সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও মুসল্লি।


জানা যায়, ইমামতি করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য ও ফটোগ্রাফি শাখার প্রশাসক ও যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক সভাপতি ড. মো. শহীদুল হক। জানাজা শেষে দোয়া ও মুনাজাত পরিচালনা করেন চবি কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতীব মাওলানা হাফেজ আবু দাউদ মুহাম্মদ মামুন। তিনি নিহত দুই শিক্ষার্থীর আত্মার শান্তি ও মাগফিরাত কামনা করেন এবং নিখোঁজ অপর শিক্ষার্থীর দ্রুত ফিরে আসার জন্য আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানান।


উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই কক্সবাজারের হিমছড়ি বিচে পানিতে নেমে নিখোঁজ হয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এখনো নিখোঁজ থাকা আরেকজন শিক্ষার্থীকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে যতক্ষণ না নিখোঁজ শিক্ষার্থীকে খুঁজে পাওয়া যায়।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন