দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে কেন হারল কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি

৪ সপ্তাহ আগে
ভারতের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে এবার রাজনৈতিক খরা কাটালো বিজেপি। এবারে দিল্লিতে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপির) জয়ের মধ্য দিয়ে আম আদমি পার্টির (এএপি) ১২ বছরের শাসনের অবসান হলো। অন্যদিকে ২৭ বছর পর দিল্লির ক্ষমতায় ‍ফিরল বিজেপি।

এবারের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির উত্থানের সাথে সাথে, বেশ কয়েকজন হেভিওয়েট নেতা পিছিয়ে পড়েছেন। যার মধ্যে রয়েছেন জাতীয় আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী মনীশ সিসোদিয়া এবং সৌরভ ভরদ্বাজ।


এই নেতারা, যারা একসময় ‘নতুন রাজনীতির’ এজেন্ডা নিয়ে সরব হয়েছিলেন এবং সবসময় দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা বলেছেন তারাই ১২ বছর পরে দুর্নীতির অভিযোগ এবং জনগণের কাছে দেয়া প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ। 

 

আরও পড়ুন:নিজ আসনেই হেরে গেলেন কেজরিওয়াল, বড় জয়ের পথে বিজেপি


রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ রশিদ কিদওয়াই যিনি ‘সোনিয়া-এ বায়োগ্রাফি’ বইটি লিখেছেন, তিনি  কয়েকটি কারণ উল্লেখ করেছেন যেগুলো এএপির পরাজয়ের পেছনে কাজ করেছে। 


১. অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ: দিল্লিতে আম আদমি পার্টির ক্ষমতা হারানোর পেছনে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পূরণে অক্ষমতাই সবচেয়ে বড় কারণ বলেছেন কিদওয়াই। বলেন, ‘অরবিন্দ কেজরিওয়াল নারী ভোটারদের ‘বিনামূল্যে জিনিসপত্রের’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু আইনত, মানুষ জানত যে তিনি তা পূরণ করতে পারবেন না।’


২. মধ্যবিত্তরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছে: তিনি দাবি করেন, নির্বাচনে প্রভাবক শক্তি মধ্যবিত্ত শ্রেণি, যারা আগে জাতীয় নির্বাচনে বিজেপি এবং বিধানসভা নির্বাচনে এএপিকে সমর্থন করেছিল এবার তারা (এএপিকে) ভোট দেয়নি। এতে এএপি ভোটারের নয় শতাংশ কমে গেছে। যার মধ্যে রয়েছে চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, ডাক্তার, সরকারি কর্মচারী এবং ব্যবসায়ীরা। কেজরিওয়ালের সংঘাতমূলক রাজনীতি এবং দুর্নীতির অভিযোগের কারণে তারা বিজেপিতে চলে গেছেন বলে জানান কিদওয়াই।


৩. নাগরিক সমস্যা: তিনি বলেন, ২০২২ সালের এমসিডি (মিউনিসিপাল করপোরেশন অব দিল্লি) নির্বাচনে এএপির জয় ক্ষতিকারক প্রমাণিত হয়েছে, কারণ জরাজীর্ণ রাস্তাঘাট, দুর্বল পরিচ্ছন্নতা এবং অপর্যাপ্ত জল সরবরাহের মতো বিষয়গুলো নাগরিক সংস্থার সাথে জড়িত থাকলেও দিল্লির ভোটাররা এমসিডি এবং দিল্লি সরকারের মধ্যে পার্থক্য করেন না। এই সমস্ত সমস্যা সমাধানে তারা কেজরিওয়ালকে ব্যর্থ হিসেবেই দেখেছেন।

 

৪. দুর্নীতির অভিযোগ: ‘শীশমহল’ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ‘সাধারণ মানুষের’ ভাবমূর্তি বদলে দিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বলেন, কেজরিওয়াল তার বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন, কিন্তু শীষ মহল মামলায় তিনি স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি। তার উচিত ছিল বিষয়টি জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া।

 

‘শিশমহল বিতর্ক’ অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নিজের বাসভবনকে শিশমহলে পরিণত করতে ৩৩ কোটি টাকা খরচ করেছিলেন বলে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের বিরুদ্ধে অভিযোগ। 

 

আরও পড়ুন:বিধানসভা / দিল্লি দখলের পথে বিজেপি 


শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোট গণনা শুরু হয়। এদিন শুরু থেকেই এগিয়ে থাকতে দেখা যায় বিজেপিকে। এবারের দিল্লি বিধানসভার নির্বাচনে ৭০টি আসনের মধ্যে ৪৮টিতে এগিয়ে রয়েছে বিজেপি। আর ২২টিতে এগিয়ে আছে আম আদমি পার্টি।

 

সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস। 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন