সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নালার মতো সরু পথ বেয়ে নামছে পানি। এক দেখায় ড্রেন মনে হলেও এটি বান্দরবান শহরের ম্যাক্সি খাল।
শহরের বুক চিড়ে প্রবাহিত হয়ে খালটি মিশেছে সাঙ্গু নদীতে। আর্মি পাড়া, মেম্বার পাড়া ও নোয়াপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় খালের দুপাড় দখল করে নানা স্থাপনা তৈরি করে বসবাস ও ব্যবসা করে আসছে প্রভাবশালী মহল। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানার পরও কার্যত কোনো ব্যবস্থা না নেয়ায় অস্তিত্ব হারাতে বসেছে খালটি। সামান্য বৃষ্টিপাতে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। ভোগান্তি পোহাতে হয় পৌরবাসীর।
আর্মি পাড়ার বাসিন্দা নাজমুল হাসান জানান, ম্যাক্সি খালটি এক সময় অনেক বড় ও গভীর ছিল। বৃষ্টি হলে খালের মাধ্যমে পানি নদীতে গিয়ে পড়ত। শহরে পানি প্রবেশ করত না। কিন্তু বর্তমানে খালটি এমন অবস্থায় রয়েছে এখানে পানির ধারণ ক্ষমতা নেই। চারপাশ দখল হয়ে গেছে। ফলে সামান্য বৃষ্টি হলে শহরের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পড়ে। তাই খালটি দখলমুক্ত করে খনন করতে হবে, তাহলে পানি ধারণ ক্ষমতা বাড়বে।
আরেক বাসিন্দা আরিফুর রহমান বলেন, ‘খালটির দুই পাড়ে বসত-বাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। ফলে খালটি এখন একেবারে ছোট হয়ে গেছে। কিছু কিছু জায়গায় একেবারে দখল হয়ে গেছে সেখানে এখন আর খালের কোনো চিহ্নই নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্ষাকালে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি যাওয়ার রাস্তা থাকে না, ফলে পানি উপচে এলাকায় প্রবেশ করে। তাই খালটির দখল উচ্ছেদ না করলে পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা সচল হবে না। আর দখল উচ্ছেদে প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে। কারণ অনেক প্রভাবশালী মানুষের ইন্ধনে দখল হয়েছে।’
আরও পড়ুন: দখল-দূষণে বিপর্যস্ত খাল উদ্ধারে খুশি শরীয়তপুরবাসী
অবৈধ দখলে খালটির গতিপথ ছোট হয়ে যাওয়ায় পানি নিষ্কাশন ক্ষমতা কমে গেছে বলে জানায় পানি উন্নয়ন বোর্ড।
বান্দরবান পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী অরূপ চক্রবর্তী বলেন, ‘ম্যাক্সি খালটির দুপাড় দখলের ফলে খালটির গতিপথ ছোট হয়ে গেছে। আমরা সেগুলো চিহ্নিত করার জন্য কাজ করছি এবং জেলাপ্রশাসনের মাধ্যমে সেগুলো উচ্ছেদ করে খালটি পুনরায় উদ্ধার করতে পারলে ড্রেজিং করে আবারও খালটির নিষ্কাশন ব্যবস্থা বাড়ানো সম্ভব হবে।’
এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসক শামীম আরা রিনি বলেন, ‘ম্যাক্সি খালটি অনেকটা দখল হয়ে গেছে। ৫ আগস্টের পর এ দখল আরও বেড়েছে। আমরা এটা নিয়ে কথা বলেছি, তালিকা হচ্ছে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হবে এবং খুব দ্রুত এ বিষয়ে আমরা পদক্ষেপ নেবো।’
গত দুই দশক ধরে স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ম্যাক্সি খালের দুপাশে গড়ে উঠেছে সহস্রাধিক স্থাপনা।
]]>