দক্ষিণাঞ্চলে আশঙ্কাজনকহারে কমছে আবাদি জমি

৩ সপ্তাহ আগে
বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে দ্রুত হারে আবাদি জমি কমছে। উন্নয়ন প্রকল্প, বসতি নির্মাণ, লবণাক্ততা আর নদীভাঙনে চাষের জমি হারিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত-ঝড়-ঝঞ্ঝা, খরা, অতিবৃষ্টি, বন্যা ও জলোচ্ছ্বাস এই কৃষিনির্ভর অঞ্চলটিকে ফেলেছে বহুমুখী ঝুঁকিতে।

কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ বছরে দক্ষিণাঞ্চলের জনসংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৯ লাখ ৫৯ হাজার ১৭০ জন। আবাদি জমি কমলেও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত বেড়েছে প্রায় ২ লাখ মেট্রিক টন। বর্তমানে আবাদি জমি রয়েছে ৮ লাখ ১৪ হাজার ৯৬৮ হেক্টর, আর অনাবাদি জমি প্রায় ৩২ হাজার হেক্টর।

 

তবু কৃষি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যর্থ হওয়ায় উদ্বেগ বাড়ছে কৃষি বিভাগে। তারা বলছে, টানা এক দশক ধরে একই ধারা চলছে। বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া গ্রামে প্রায় আড়াই হাজার একর জমি গত এক যুগ ধরে পড়ে আছে অনাবাদি।

 

কৃষকদের অভিযোগ, গ্রামের একটি খালে অপরিকল্পিতভাবে ১৮টি বাঁধ ও কালভার্ট দেয়ায় পানির প্রবাহ বন্ধ হয়ে জমি আর চাষযোগ্য নেই। চরকাউয়ার কৃষক সেলিম মীর বলেন, ‘খালে একটি কালভার্ট দেয়ার পর থেকেই পানি আটকে যায়। ফলে একরের পর একর জমি অনাবাদি পড়ে আছে।’

 

আরও পড়ুন: হবিগঞ্জে প্রবাসীদের অনাবাদি জমিতে হতাশা বাড়ছে কৃষকের!

 

কৃষক সবুজ গাজী বলেন, ‘আগের তুলনায় বর্ষায় বৃষ্টি বেড়েছে, আবার গরমের সময় খরাও বেশি হয়।’ আরেক কৃষক আজিজুল ব্যাপারী জানান, ‘অধিকাংশ জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।’

 

কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, গত ৫ বছরে আবাদি জমি কমেছে প্রায় ২৪ হাজার হেক্টর। এর জন্য উন্নয়ন প্রকল্প, ইটভাটা, বসতি নির্মাণ, লবণাক্ততা ও নদীভাঙনকে দায়ী করা হচ্ছে। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় সিডর, আইলা বা আম্পানের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ুর অনিয়মিত আচরণও কৃষিকে বহুমুখী সংকটে ফেলেছে।

 

ভবিষ্যতে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গবেষণা ও সমন্বিত উদ্যোগের ওপর জোর দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ালে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা ধরে রাখা সম্ভব বলেও দাবি তাদের।

 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক ড. নজরুল ইসলাম সিকদার বলেন, ‘গ্রামীণ বসতবাড়ির আঙিনায় পতিত জমিও এখন চাষের আওতায় আসছে। গবেষণার মাধ্যমে যদি আরও উচ্চফলনশীল জাত উদ্ভাবন করা যায়, তাহলে একই জমি থেকে ৪-৫ গুণ বেশি ফসল উৎপাদন সম্ভব হবে।’

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন