‘থানা থেকে আর ফোন দিলে পেট্রোল দিয়ে সব জ্বালিয়ে দেবো’

১ দিন আগে
দোকান ভাড়া নেয়ার নামে মালিককে অফিসে ডেকে মারধর ও জোরপূর্বক শতাধিক স্ট্যাম্পে সই করিয়ে দখলের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে বরকত উল্লাহ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, পরে থানায় অভিযোগ দিলে চালানো হয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট। আর এ নিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আটকে রাখা হয় সময় সংবাদের টিমকে।

ঘটনার সূত্রপাত গত ২৪ আগস্ট। পূর্বাচল ১৩ নম্বর সেক্টরের আরবি আলিনা ফুডপার্কে একটি দোকান ভাড়া দিতে বিজ্ঞপ্তি দেন দোকানের মালিক আশিকুর রহমান ও আরাফাতুর রহমান। এতেই বিপদের শুরু দুই ভাইয়ের।

 

দোকানটি ভাড়া নিতে ৩০ আগস্ট মালিকদের বারিধারা ডিওএইচএসএ নিজের অফিসে ডেকে নেন বরকত উল্লাহ। দুই ভাইয়ের অভিযোগ, সেখানে গেলে মারধর ও হুমকি-ধামকি দিয়ে শতাধিক স্ট্যাম্পে সই করানো হয় তাদের।

 

ভুক্তভোগী আশিকুর রহমান বলেন, 

আমার কাছে নগদ ৩৫ হাজার টাকা, মোবাইল, ওয়ালেটে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল। তারা সব কিছু জোর করে নিয়ে নেন। এরপর গালাগাল করে মারধর করেন। একপর্যায়ে আমরা বলি, আপনার কী চান? তখন তারা বলেন, তোর ওই জায়গা পছন্দ হয়েছে। এটা দখল নেবো। এ কথা না শুনলে মেরে বুড়িগঙ্গায় ফেলে দেবো। তারা আমাদের কাছ থেকে আনুমানিক শতাধিক স্ট্যাম্পে সই নেন। সেইসঙ্গে আমরা সেচ্ছায় তাদেরকে এটি দিয়ে আসছি, এমন জবানবন্দির একটা ভিডিও ধারণ করে রাখেন।   

 

ঘটনার পরদিন ক্যান্টনমেন্ট থানায় অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা। পরে তাদের মোবাইল ফোনে আসে হত্যার হুমকি।

 

আরও পড়ুন: বাঁকখালী নদীতে উচ্ছেদ অভিযানের প্রতিবাদে স্থানীয়দের সড়ক অবরোধ

 

ফোনে অভিযুক্ত বরকত উল্লাহ ওই ভুক্তভোগীকে বলেন, ‘আমাকে থানা থেকে আর একবার ফোন দিলে নিশ্চিত থাক, পেট্রোল দিয়ে সব জ্বালিয়ে দেবো।’  

 

অভিযোগ তুলে না নেয়ায় ১ সেপ্টেম্বর রাতে পূর্বাচলের আরবি আলিনা ফুডপার্কে চালানো হয় হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট। মোবাইল ফোনে ধারণ করা ফুটেজে দেখা যায় বরকত উল্লাহকে।

 

দোকানের কর্মচারীরা বলেন, হামলাকারীদের সঙ্গে বন্দুক, চাপাতি ও লাঠিসোঁটা ছিল। ওইগুলো দিয়ে হামলা চালায়। দোকানের মালিককে মারধর করা হয়।

 

বারিধারা ডিওএইচএসের ১১ নম্বর রোডের ৫৩৩ নম্বর বাসায় অভিযুক্ত বগু গ্রুপের চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহর অফিস। সেখানে না পেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় সংবাদ। শুরুতে অভিযোগ অস্বীকার করলেও গড়মিল পাওয়া যায় তার কথায়।

 

বরকত উল্লাহ ফোনে বলেন, আমার বিরুদ্ধে অসত্য অভিযোগ আনা হয়েছে। আমাকে সরকারি জায়গা কেনার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল। তখন আমি বলেছি, সরকারি জায়গা তো কেনা যায় না।  

 

আরও পড়ুন: ৫০ বছর পর দখলমুক্ত কোটালীপাড়া থানার ৪ একর জমি

 

কিন্তু প্রথমে তাদেরকে চেনেন না বললেও পরে তিনি বলেন, ‘একটা কথা হচ্ছে অনেক দূর সম্পর্কে চিনি, আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে হঠাৎ করে কথা উঠেছে।’

 

ফোনাআলাপ শেষে কক্ষ থেকে বেরিয়ে আসার সময় বাধার মুখে পড়েন সময় সংবাদের প্রতিবেদক। বাইরে থেকে দরজা আটকে দেন বরকত উল্লাহর লোকজন।

 

বরকত উল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল আলিম। তিনি বলেন, 

অভিযোগের প্রেক্ষিতে মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। তদন্ত কর্মকর্তা কাজ শুরু করেছেন।

 

এর আগেও, বরকত উল্লাহর বিরুদ্ধে ভুয়া রিক্রুটিং এজেন্সি খুলে বিদেশে লোক পাঠানোর কথা বলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করেছে গণমাধ্যম।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন