জুবেদা খাতুন কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার ছেলে পরশু দিন আলাপ করছিল, বউ বিদেশ যেতে চেয়েছিল। আমি বলেছিলাম, বউকে বিদেশে দেবে না, বাড়িতে ঘর করে বউ নিয়ে থাকো। কিন্তু বউ শুধু বিদেশ যেতে চেয়েছিল, সে দেবে না; হের জন্য আমার পুত্রকে মারল।’
পুলিশ জানায়, গাজীপুরে পোশাক কারখানায় কাজের সুবাদে নালিতাবাড়ীর রতন মিয়া ও হালুয়াঘাট উপজেলার ভুবনকুড়া ইউনিয়নের আমিরখাঁকুড়ার দুলাল মিয়ার মেয়ে জুলেখা খাতুনের (২৫) মধ্যে প্রেম হয়। তারা ২০১৬ সালের ১১ জুলাই বিয়ে করেন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
দেড় বছর আগে জুলেখা গৃহকর্মীর কাজে দুবাই যান। স্ত্রী চলে যাওয়ায় পোশাক কারখানায় কাজ করতেন রতন। দেড় মাস আগে জুলেখা দেশে দুই মাসের ছুটি নিয়ে আসে। আবার দুবাই যেতে চাইলে স্বামী রতন নিষেধ করেন। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কলহ চলছিল।
আরও পড়ুন: ময়মনসিংহে বাবা-মেয়েকে গলা কেটে হত্যা
বুধবার দুবাই ফ্লাইটের কারণে মঙ্গলবার রাতে রতন গাজীপুর থেকে শ্বশুরবাড়িতে যান। দিবাগত রাত তিনটার দিকে বাড়িতে চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে যান। তারা ঘরের মেঝেতে রতনের গলাকাটা দেহ এবং বিছানায় মেয়ের গলাকাটা দেহ দেখেন। জুলেখা খাতুনের গলায় কাটা ও হাতে জখমের চিহ্ন দেখা যায়। স্থানীয়রা গুরুতর অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান।
হালুয়াঘাট থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ দুটি উদ্ধার করেছে। বুধবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সিআইডির বিশেষ ক্রাইমসিন দল। হত্যায় ব্যবহৃত রক্তমাখা দা, একটি চিরকুট এবং বিষের বোতলও উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে চিরকুটটি নিহত রতনের লেখা বলে মনে করা হচ্ছে। চিঠিতে পাঁচজনের নাম উল্লেখ আছে, যাদেরকে ‘আমাদের মৃত্যুর জন্য দায়ী’ বলা হয়েছে। এছাড়াও জুলেখার অবৈধ সম্পর্কের কথাও চিঠিতে উল্লেখ আছে।
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘পুলিশ হেফাজতে থাকা শ্বশুর-শ্বাশুড়ির দাবি অনুযায়ী রতন মেয়েকে হত্যা এবং স্ত্রীকে হত্যা চেষ্টা করে আত্মহত্যা করেছে। তবে রতনের গলার আঘাত দেখে মনে হচ্ছে, ভিন্ন কোনো ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ তদন্ত করে মূল ঘটনা উদঘাটনের চেষ্টা করছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।’
]]>
২ সপ্তাহ আগে
৫






Bengali (BD) ·
English (US) ·