সংযোগ সেতু ধসের ফলে তেগাছিয়া বাজার সংলগ্ন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সঙ্গে রামগতি বাজার, মাছঘাট, টাংকি বাজার, চেয়ারম্যান ঘাট এবং পার্শ্ববর্তী নোয়াখালী জেলার হাতিয়ার মূল ভূখণ্ডের যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তেগাছিয়া সেতুটি সড়ক থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় কৃষিপণ্য পরিবহন, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বয়ারচর ও চরগাজী ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের শুরুর দিকে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে তেগাছিয়া খালের ওপর ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যের স্থায়ী সেতুটি নির্মাণ করে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ), লক্ষ্মীপুর। এর পূর্বে এখানে একটি পুরনো ও নড়বড়ে কাঠামোর সেতু ছিল। সেতুটির পাশে অবস্থিত তেগাছিয়া বাজার এলাকায় মৎস্য অধিদপ্তর প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করে আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র।
রামগতির মেঘনা নদী হতে আহরিত ইলিশ ও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ প্রতিদিন এই কেন্দ্রে বিক্রি করে থাকেন জেলেরা। ব্যবসায়ীরা এখান থেকে ইলিশ সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করে থাকেন। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ টাকার মাছ এই কেন্দ্র থেকে পরিবহনের জন্য সেতুটি ব্যবহার করা হয়।
বিগত কয়েকদিনে মেঘনায় অস্বাভাবিক উচ্চতায় জোয়ার দেখা যায়, সঙ্গে ছিল অবিরাম বর্ষণ।
স্থানীয় কৃষক আব্দুজ্জাহের বলেন, ভারী বর্ষণ আর নদীর স্রোতের ফলে খালের পানি গড়িয়ে পড়ার সময় সেতুর দুপাশের মাটি দেবে যায়। গত ২৮ জুলাই, সোমবার রাতে তীব্র জোয়ারের স্রোতে সড়কের দুইপাশের মাটি সম্পূর্ণভাবে সরে গিয়ে বড় ধরনের গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুরের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ: ৩৫০ কোটি টাকার সরকারি সম্পদ উদ্ধার
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল আলিম বলেন, সড়ক থেকে সেতুতে প্রবেশদ্বারের মাটি ধসে পড়ায় শিক্ষার্থী, রোগী, ব্যবসায়ী সবাই দুর্ভোগে পড়েছেন।
ব্যবসায়ী আলফাজ উদ্দিন বলেন, এখানকার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ইলিশ পাঠানো হয়। এখন রাস্তা বন্ধ, গাড়ি চলাচল বন্ধ- এতে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে আমরা।
এ বিষয়ে রামগতি উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী স্নেহাল রায় জানান, সড়ক ভেঙে যাওয়ার খবর পেয়ে আমরা তাৎক্ষণিক সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
রামগতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ আমজাদ হোসেন বলেন, সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।