রাতেই মাছ ধরার কাজ শুরু করেন জেলেরা, আর ভোর হতেই আহরণকৃত মাছ নিয়ে হাজির হন বিএফডিসির (বাংলাদেশ মৎস্য উন্নয়ন করপোরেশন) প্রধান ঘাটসহ জেলার চারটি অবতরণ কেন্দ্রে। ফলে দীর্ঘ বিরতির পর কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে ফিশারি ঘাটে।
জানা গেছে, ৭২৫ বর্গকিলোমিটারের কাপ্তাই হ্রদের বিস্তীর্ণ জলে বসেছে জেলে, নৌকা আর জালের মেলা। মাছ আহরণের পাশাপাশি রাজস্ব মিটিয়ে বরফজাতকরণের কাজেও ব্যস্ত সময় পার করছেন শ্রমিকরা। এসব মাছ রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হচ্ছে।
প্রথমদিনেই ফিশারি ঘাটে অবতরণকৃত মাছের পরিমাণ ছিল উল্লেখযোগ্য। তবে ব্যবসায়ীদের মধ্যে মাছের আকার নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গেছে। চাপিলা মাছের পরিমাণ বেশি থাকলেও কাচকি ও কার্পজাতীয় মাছ তুলনামূলক কম ছিল।
কাট্টলী বিল থেকে আসা জেলে ছাদেক মিয়া জানান, জালে প্রচুর মাছ উঠেছে। আমি একাই ৯০ ড্রাম মাছ নিয়ে এসেছি। এতদিন কর্মহীন ছিলাম, এখন কাজে ফিরে ভালো লাগছে। আশা করি বছরের বাকি সময়টা ভালো চলবে।
পল্টুনের শ্রমিক শাহাদৎ হোসেন বলেন, তিন মাস আমরা খুব কষ্টে ছিলাম। এখন আবার আয়-রোজগার শুরু হয়েছে, তাই অনেকটাই স্বস্তিতে আছি।
আরও পড়ুন: শনিবার মধ্যরাত থেকে কাপ্তাই হ্রদে মাছ ধরা শুরু
ব্যবসায়ী পান্না চৌধুরী বলেন, প্রথম দিনের মাছে আমরা খুশি। তবে সব জেলেরা এখনো নামতে পারেনি। দু-একদিনের মধ্যে পরিস্থিতি আরও ভালো হবে বলে আশা করছি।
অন্যদিকে ব্যবসায়ী আব্দুর শুক্কুর বলেন, মাছের পরিমাণে খুশি হলেও আকারে একটু হতাশ হয়েছি। হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকার পরও বড় মাছ দেখা যায়নি। তবে কিছুদিন পর পরিস্থিতি বদলাবে বলে মনে করছি।
বিএফডিসির রাঙামাটি শাখার ব্যবস্থাপক কমান্ডার মো. ফয়েজ আল করিম বলেন, প্রথম দিনেই অবতরণকৃত মাছের পরিমাণ ভালো। হ্রদে পর্যাপ্ত পানি থাকায় এবার সময়মতো নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া সম্ভব হয়েছে। তাই রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যাশা বেশি।
বিএফডিসি সূত্র জানায়, গত বছর জেলার চারটি অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৮ হাজার ৬৯২ মেট্রিকটন মাছ অবতরণ হয়, যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয় ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।