ভুক্তভোগী নারী রিনা পারভীন (৩০) হাকিমপুর উপজেলার ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি বর্তমানে হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মহিলা বিভাগের ১৬ নম্বর বেডে চিকিৎসাধীন। এসিডে তার ডান হাত ও বুকের একাংশ ঝলসে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
রিনার মামা হারুন উর রশিদ জানান, ২০১২ সালে রিনা পারভীনের বিয়ে হয় একই ইউনিয়নের এন্তাজ আলীর ছেলে সুমন মন্ডলের সঙ্গে। শুরুতে সংসার ভালো চললেও সাম্প্রতিক সময়ে সম্পর্কের অবনতি ঘটে এবং সুমন একতরফাভাবে রিনাকে তালাক দেয়। তালাকের পরও সুমন রিনার ওপর নির্যাতন চালিয়ে আসছিলেন। এ অবস্থায় রিনা নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন, যা পরবর্তীতে সুমনকে আরও ক্ষিপ্ত করে তোলে।
রিনা পারভীন বলেন, 'শনিবার (৫ জুলাই) ভোররাতে আমি বাবার বাড়িতে ছোট ভাগ্নেকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ জানালা দিয়ে কে যেন আমার শরীরে তরল জাতীয় কিছু নিক্ষেপ করে। সঙ্গে সঙ্গে শরীরে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া শুরু হয়। আমার চিৎকারে মা ছুটে আসে, জানালা খুলে দেখি আমার সাবেক স্বামী সুমন দাঁড়িয়ে। এ সময় সুমন আমাকে ঠান্ডা পানি দেয়ার চেষ্টা করে।'
আরও পড়ুন: বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে জানালা দিয়ে এসিড নিক্ষেপ, ঝলসে গেল ৩ জন
এ বিষয়ে প্রতিবেশী নাজির বলেন, 'এ ধরনের ঘটনা সমাজে গভীর উদ্বেগের বিষয়। একজন নারীকে এভাবে ক্ষতবিক্ষত করা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। আমরা দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।'
হাকিমপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. মশিউর রহমান বলেন, 'রিনা পারভীনের হাতে ও বুকে পোড়া রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে কিসে বা কীভাবে পোড়েছে, তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।'
হাকিমপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক জানান, 'অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কী কারণে শরীরে দাহ্য পদার্থের প্রভাব হয়েছে, তা তদন্তেই পরিষ্কার হবে।'