২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই দিনই বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে তারেক রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপর গত সাত বছর ধরে লন্ডন থেকেই তিনি দল চালাচ্ছেন।
তারেক রহমান লন্ডনে যাওয়ার পর আওয়ামী লীগ আমলে তার বিরুদ্ধে শতাধিক মামলা হয়। তার অনুপস্থিতিতে পাঁচটি মামলায় সাজাও দেওয়া হয়।
এর মধ্যে পাসপোর্টের মেয়াদ ফুরিয়ে যাওয়ায় তারেককে যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় নিতে হয়। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিএনপির তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে আশার সঞ্চার হয়- এবার হয়ত দেশে ফিরবেন তারেক রহমান।
দলের নেতারাও বলতে শুরু করেন, শিগগিরই তারেক দেশে ফিরবেন। কিন্তু ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রায় ৮ মাস চলে গেলেও এখনো তারেক রহমান দেশে ফেরেননি। কিন্তু কেন? বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ূন কবিরের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে কথা হয় সময় সংবাদ-এর। সময় টেলিভিশনের বিশেষ প্রতিবেদক আহমেদ সালেহীনের নেয়া সাক্ষাতকারটি নিচে দেয়া হলো-
সময়: দীর্ঘদিন যাবৎ তারেক রহমান লন্ডনে অবস্থান করছেন। তিনি কবে দেশে ফিরবেন?
হুমায়ূন কবির: তিনি দেশে তো অবশ্যই ফিরবেন। দেশে ফেরার জন্যই তো তার রাজনীতি। উনি দেশে ফিরতে যদি না চাইতেন তাহলে তো উনার এই ১৬/১৭ বছর উৎসর্গ করার, নেতৃত্ব দেয়ার, মানুষকে মোবিলাইজ করার দরকার ছিলো না। কিন্তু উনি তো সব ভূমিকাই রেখেছেন, নেতৃত্ব দিয়েছেন, অনেক কিছু হারিয়েছেন। সবকিছুই তো করেছেন দেশে আসার জন্য।
সময়: কবে আসবেন?
হুমায়ূন কবির: এটা তো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ওপরও কিছুটা নির্ভর করবে। নির্বাচনের একটা পরিষ্কার রোডম্যাপ দিতে হবে। উনার মতো এত বড় একজন নেতার নিরাপত্তার ব্যাপারও আছে। যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটা স্থিতিশীলতার গ্যারান্টি দিতে পারবে, উনার নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিতে পারবে তখন তিনি আসবেন, অবশ্যই আসবেন।
সময়: দেশে আসার ক্ষেত্রে উনি কি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন?
হুমায়ূন কবির: উনি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তা না। তবে আমি যেটা বলছি, উনার মতো একজন সিনিয়র রাজনৈতিক নেতা, যাকে দেশের ভেতরে এবং বাইরে সম্ভাব্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখা হচ্ছে, স্বাভাবিকভাবেই তার কিছু আন্তর্জাতিক সিকিউরিটির ব্যাপার-স্যাপার আছে।
আরও পড়ুন: যে কোনো মূল্যে ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে: তারেক রহমান
সময়: কোনো হুমকি কি আছে?
হুমায়ূন কবির: হ্যাঁ। হুমকি তো আছেই। স্বাভাবিক। এমনকি (দেশের) ভেতরেও আছে। মাইনর কিছু তো থাকেই, সব দেশেই আছে এটা।
উনি এখন একটা এলিমেন্টকে, দুঃশাসনকে মার্জিনালাইজ করেছেন, এটাতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। সেই দুঃশাসনের মাইনরিটি অংশ চেষ্টা চালাবে এটাই তো স্বাভাবিক। তবে যতোই চাপ থাকুক উনি অবশ্যই দেশে আসবেন।
সময়: আপনি বলছেন, আন্তর্জাতিক থ্রেট রয়েছে। আপনারা কোন কোন দেশ বা কোন কোন সংস্থার কথা বলছেন?
হুমায়ূন কবির: এখানে তো বিভিন্ন ধরনের ‘রোগ ইন্সটিটিউশন’ আছে। মানে এখানে ইন্টেলিজেন্স এলিমেন্ট আছে বিভিন্ন জায়গার। আপনারা তো জানেনই, এগুলো আছে। আমাদের এখানে তো এগুলো নতুন না। রাজনৈতিক নেতাদের হত্যা তো নতুন কিছু না। আমাদের উপমহাদেশে এগুলো আছেই।