রোববার (৩ আগস্ট) বাংলাদেশ রেলওয়ের ট্রাফিক কমার্শিয়াল শাখার এক আদেশে বিশেষ ট্রেন পরিচালনার তথ্য জানানো হয়।
রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, জুলাই ঘোষণাপত্র পাঠ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা ছাত্র-জনতার জন্য ট্রেন ভাড়া করার বিষয়ে রোববার জুলাই গণ–অভ্যুত্থান অধিদফতর চিঠি দেয় মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে রেলপথ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়।
দিনে দিনেই রেলপথ মন্ত্রণালয় আটটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করেছে। ট্রেনগুলোর ভাড়া মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে পরিশোধ করা হবে বলে সূত্র জানিয়েছে। এই ৮ জোড়া ট্রেনের ভাড়া প্রায় ৩০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
কোথা থেকে আসবে বিশেষ ট্রেন
রেলওয়ে সূত্র জানিয়েছে, ১৬টি কোচের সমন্বয়ে তৈরি করা একটি বিশেষ ট্রেন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসবে। এতে আসনসংখ্যা হবে ৮৯২। এর বাইরে দাঁড়িয়ে আরও অনেক মানুষ আসতে পারবেন। এই ট্রেনের জন্য রেল কর্তৃপক্ষ ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৭ লাখ টাকার কিছু বেশি।
গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে আরেকটি বিশেষ ট্রেন চলবে ৮টি কোচ নিয়ে। এতে যাত্রী আসন থাকবে ৭৩৬টি। এই ট্রেনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে সাড়ে ৭২ হাজার টাকার মতো।
নারায়ণগঞ্জ-ঢাকা পথে ১০টি কোচ নিয়ে বিশেষ ট্রেনটি চলবে। এতে আসনসংখ্যা ৫১০। এই ট্রেনের জন্য সাড়ে ৫৬ হাজার টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে।
নরসিংদী থেকে ঢাকায় আসবে ১২ কোচের একটি ট্রেন। এটিতে আসনসংখ্যা ৬৫২। ভাড়া ধরা হয়েছে প্রায় ৯৫ হাজার টাকা।
সিলেট থেকে ১১টি কোচ নিয়ে বিশেষ ট্রেন আসবে। এর কোচসংখ্যা ১১ এবং ট্রেনটিতে ৫৪৮টি আসন থাকবে। এই ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লাখ ২৩ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: জামায়াতকে ৪ জোড়া ট্রেন বরাদ্দ, যা বলছে রেল কর্তৃপক্ষ
রাজশাহী থেকে ঢাকার পথে ট্রেন আসবে ৭টি কোচ নিয়ে। এতে আসন থাকবে ৫৪৮টি। এই ট্রেনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৮৫ হাজার টাকা।
১৪টি কোচ নিয়ে একটি বিশেষ ট্রেন আসবে রংপুর থেকে। এতে যাত্রী আসন থাকবে ৬৩৮টি। এই ট্রেনের জন্য ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা।
ফরিদপুরের ভাঙা থেকে ৭টি কোচ নিয়ে একটি ট্রেন আসবে। এতে আসনসংখ্যা হবে ৬৭৬। এই ট্রেনের ভাড়া প্রায় ২ লাখ ৬১ হাজার টাকা।
ট্রেন কখন ছাড়বে
বিশেষ ট্রেনগুলো পরিচালনার জন্য একটি সূচি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে রংপুর থেকে আসা ট্রেন যাত্রা শুরু করবে কর্মসূচির আগের দিন, ৪ আগস্ট রাত সাড়ে ১১টায়। এর বাইরে দূরের গন্তব্য চট্টগ্রাম, সিলেট ও রাজশাহী থেকে ৫ আগস্ট ভোরে ট্রেনগুলো ছেড়ে আসবে। ঢাকার আশপাশের জেলা গাজীপুর, নরসিংদী ও ফরিদপুর থেকে ট্রেনগুলো ছাড়বে দুপুরের আগে আগে। অনুষ্ঠান শেষে দূরের গন্তব্যের ট্রেনগুলো আগে ফিরতি যাত্রা শুরু করবে। পর্যায়ক্রমে কাছের গন্তব্যের ট্রেনগুলো ছাড়বে।
আরও পড়ুন: রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে ইঞ্জিন সংকট, ট্রেন চলাচলে চরম বিশৃঙ্খলা
রেলওয়ের মহাপরিচালক আফজাল হোসেন সময় সংবাদকে বলেন, মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় তাদের প্যাডে ট্রেন চেয়ে আবেদন করেছে। বলা হয়েছে ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবসের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় আসবে ছাত্র-জনতা, এজন্য তারা ট্রেন ভাড়া চায়। সেজন্য ৮টি ট্রেন তাদের ভাড়া দেয়া হয়েছে। ৮টি ট্রেনের ভাড়া পরিশোধ করেছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়, ভাড়া এসেছে ৩০ লাখ টাকার উপরে।
তিনি আরও জানান, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসবে চারটি আন্তঃনগর ট্রেন। এগুলো বিশেষ ট্রেন, শুধুমাত্র সমাবেশের জন্যই ট্রিপ পরিচালিত হবে। এগুলো নিয়মিত চলাচলকারী ট্রেন নয়। এছাড়া চারটি কমিউটার ট্রেন ভাড়া দেয়া হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়কে। এগুলোর মধ্যে জয়দেবপুর কমিউটার, নারায়ণগঞ্জ কমিউটার, নরসিংদী কমিউটার ও ভাঙ্গা কমিউটার।