ঢাকা, সিটি ও আইডিয়াল কলেজ: ছয় মাসে ১২০ বার সংঘর্ষ

১ সপ্তাহে আগে
কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ঢাকা, সিটি ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের। ৬ মাসে এ তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা মারামারি-সংঘর্ষে জড়িয়েছেন প্রায় ১২০ বার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইগো ও হিরোইজম থেকে সংঘাতের সূত্রপাত। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, জড়িতদের টিসি দেয়ার পাশপাশি এ তিন কলেজে যাতে ভর্তি না হতে পারে সে-ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর পুলিশ বলছে, সংঘর্ষ হলেই এখন থেকে মামলা করা হবে।

রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত ব্যবসায়িক এলাকায় দেড় কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান- ঢাকা, সিটি ও আইডিয়াল কলেজ। তিন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ২০ থেকে ২৫ হাজার।

 

শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতি-মারামারি থেকে মাঝে মাঝেই রণক্ষেত্রে রূপ নিচ্ছে মিরপুর সড়কের নিউমার্কেট মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব মোড় পর্যন্ত। কখনও কখনও ছড়িয়ে পড়ছে সড়কের দুই পাশের গলিতেও।

 

একাধিক সংঘর্ষ পর্যালোচনা করে দেখা গেছে এসব এলকায় বিভিন্ন কোচিং সেন্টারে পড়ালেখা করে এই তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা। সেখানে কথাকাটি, চায়ের দোকানে বসা নিয়ে দ্বন্দ্ব, প্রেমঘটিত বিষয় ও সামাজিকমাধ্যমে মন্তব্যের মতো বিষয়গুলো সংঘাতের নেপথ্যের কারণ।

কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না ঢাকা, সিটি ও আইডিয়াল কলেজের শিক্ষার্থীদের। ৬ মাসে এ তিন কলেজের শিক্ষার্থীরা মারামারি-সংঘর্ষে জড়িয়েছেন প্রায় ১২০ বার। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইগো ও হিরোইজম থেকে সংঘাতের সূত্রপাত। কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, জড়িতদের টিসি দেয়ার পাশপাশি এ তিন কলেজে যাতে ভর্তি না হতে পারে সে-ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। আর পুলিশ বলছে, সংঘর্ষ হলেই এখন থেকে মামলা করা হবে।

 

ডিএমপির সূত্র মতে  শিক্ষার্থীরা মারামারি-সংঘর্ষে জড়িয়েছেন প্রায় ১২০ বার।

 

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বলেন, গুটিকয়েক উচ্ছৃঙ্খল ছাত্রের জন্য সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে তিন কলেজেরই।

 

নিরাপত্তাহীনতায় তিন কলেজ এলাকার বাসিন্দারাও। ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা।

 

সংঘর্ষ থামাতে সরকারকে উদ্যোগী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞ জানান, দায়বদ্ধতা আছে অভিভাবকদেরও।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক মো. মজিবুর রহমান বলেন, 

এই তিন কলেজের বিষয়টি এখন তিক্ততার পর্যায়ে চলে গেছে। প্রধান দায়টা হলো সরকারের। যারা এখন ক্ষমতায় আছে, যাদের কাজ এখন আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা, সাধারণ জনগণকে নিরাপত্তা দেয়ার। সাধারণ জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে হবে এ সরকারকে। এই কাজগুলো এ সরকারকে করতে হবে।  

 

 

কলেজ কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীদের মারামারি বন্ধে তিন কলেজ মিলে কমিটি গঠন করে নিয়মিত টহল দেয়া হচ্ছে। তদন্তে দোষী হলে নেয়া হচ্ছে কঠোর ব্যবস্থাও।

 

ঢাকা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যাপক পারভীন সুলতানা হায়দার বলেন, 

প্রতিটি ক্লাশে ক্লাশে গিয়ে তাদের বোঝানো হয়েছে। তাদের বোঝানো হয়েছে যে, তোমরা মারামারি-বিবাদ এসবের মধ্যে জড়িও না। তোমরা তোমাদের নিরাপদ রাখো এবং নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ার চেষ্টা করো, বাবা-মাকে স্বস্তিতে রাখো এবং দেশবাসীকেও।

 

 

সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক এফএম মোবারক হোসেন বলেন, ঢাকা ও আইডিয়াল কলেজের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করা হয়েছে। যৌথভাবে মহড়া দেয়া হচ্ছে এবং একটি টিমও গঠন করা হয়েছে। তারাও দায়িত্ব পালন করছে।

 

আইডিয়াল কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ অধ্যাপক মুহাম্মদ রেযওয়ানুল হক বলেন, 

যারা এ সমস্ত কর্মকাণ্ডগুলো করছে, তদন্তে প্রমাণ হলে কিন্তু আমরা সরাসরি টিসি দেয়া হচ্ছে। একটা সমস্যা হলো ধরুন সিটি কলেজ থেকে কাউকে টিসি দেয়া হলো, সে গিয়ে আইডিয়ালে ভর্তি হচ্ছে, আবার আইডিয়াল থেকে টিসি দেয়া হচ্ছে সে গিয়ে অন্য কলেজে ভর্তি হচ্ছে। এ শিক্ষার্থীরা কিন্তু এ এলাকার মধ্যে থাকছে। এই বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বসতে যাচ্ছি। এ ৫ কলেজের মধ্যে কোনো ছাত্রকে টিসি দেয়া হয়, তাহলে তাকে কেউ এ ৫ কলেজের মধ্যে তাকে ভর্তি নেবে না।

 

পুলিশ বলছে, প্রতি মাসে ঢাকা কলেজ ৭ থেকে ৮টি, সিটি কলেজ ৬ থেকে ৭টি আর আইডিয়াল কলেজ ৫ থেকে ৬টি মারামারি ও সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।

 

ডিএমপির রমনা বিভাগের উপ কমিশনার মো. মাসুদ আলম বলেন,

মিছিলে যারা থাকেন, অনেকে তারা জানেন না কি কারণে তারা এই মিছিলে এসেছেন। অনেক রকম উদ্যোগ নিয়েছি। মামলা নিয়েছি কারণ মামলার ভয়ের যেন তারা শান্ত হয়।  

 

শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ থামাতে কাজ করছে সেনাবাহিনীও।

 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন