ড্যাপ সংশোধনের প্রস্তাবে ঢাকার বাসযোগ্যতা নিয়ে শঙ্কা বিশেষজ্ঞদের

৩ সপ্তাহ আগে
সম্প্রতি ঢাকার বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনায় (ড্যাপ) রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) যেসব সংশোধনীর প্রস্তাব করেছে, সেখানে শহরের বাসযোগ্যতা, ধারণক্ষমতা, নাগরিক সুবিধা ও পরিবেশ সুরক্ষা প্রাধান্য পায়নি বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এখানে গুরুত্ব পেয়েছে আবাসন ব্যবসায়ীদের ব্যবসায়িক স্বার্থ। এতে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবে এরমধ্যেই হুমকির মুখে থাকা ঢাকার বাসযোগ্যতা।

‘কোন স্বার্থে ড্যাপের বারংবার সংশোধনের উদ্যোগ: আইপিডি’র পর্যবেক্ষণ’ শীর্ষক পরিকল্পনা ও উন্নয়ন পর্যালোচনা বিষয়ক অনলাইন সেমিনারে উঠে এসেছে এসব বিষয়। এই সেমিনারের আয়োজন করে ইনস্টিটিউট ফর প্ল্যানিং এন্ড ডেভেলপমেন্ট (আইপিডি)।

 

সেমিনারের মূল প্রবন্ধে আইপিডির পরিচালক অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, ‘ড্যাপ সংশোধনে রাজউকের সংশোধনীতে ভবনের আকার-উচ্চতার বাড়ানোর প্রস্তাবনা ছাড়া অন্য কিছু আসেনি। বন্যা প্রবাহ এলাকা, জলাভূমি, কৃষিজমি রক্ষার বিষয়টি উপেক্ষিত থেকেছে। আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি, আবাসন ব্যবসায়ী ও কিছুসংখ্যক পেশাজীবী ড্যাপ বাতিল বা স্থগিতের আবেদন করছে শুধু ভবন নির্মাণে বেশি এফএআর (ফার) মান বাড়ানোর জন্যই। আমাদের সেই শঙ্কাই সত্যি প্রমাণ হয়েছে। ড্যাপ সংশোধনে প্রস্তাবিত এরিয়া ফার ও ব্লকভিত্তিক ফার মান নির্ধারণের ক্ষেত্রে বাসযোগ্য শহর নির্মাণে পরিকল্পনার নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়নি। ফলে ড্যাপে প্রস্তাবিত সংশোধনীগুলো ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতাকে আরও ঝুঁকির মধ্যে ফেলতে পারে।’

 

আরও পড়ুন: নতুন আতঙ্ক ই-বর্জ্য, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

 

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আকতার মাহমুদ বলেন, একটি বসবাসযোগ্য শহরে শুধু আবাসন নয়; পরিবেশ, প্রতিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গণপরিবহন ইত্যাদি বিষয়েও গুরুত্ব দেয়ার কথা। অথচ আমাদের ব্যবসায়ী মহল কেবল ড্যাপ বাতিল এবং ফার বৃদ্ধির কথাই বলছে। এমনকি ফার বৃদ্ধি করা হলে ভবিষ্যতে ওই এলাকা বসবাসযোগ্য থাকবে কি না তা নিয়ে কোনো গবেষণা করা হয়নি।

 

পরিবেশকর্মী আমিরুল রাজিব বলেন, 

ড্যাপ নিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবীর পরস্পরবিরোধী অবস্থানের দায় সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর উপরেও বর্তায়। দেশের প্রতিটি শহর ঢাকাকে অনুকরণ করার চেষ্টা করে। ফলে ড্যাপের যেকোনো সিদ্ধান্ত সুবিবেচনাপ্রসূত হতে হবে। নাগরিক অধিকারের স্থান থেকে শহরের নাগরিক সুবিধাদি বাড়াতে সরকারি সংস্থাসমুহের উপর চাপ প্রয়োগ করতে হবে। কেবল মানুষ নয়, প্রতিটা প্রাণী ও কীটপতঙ্গের কথাও বিবেচনা করে শহরের পরিকল্পনা করতে হবে।

 

আরও পড়ুন: ভাড়া আর জমা বাড়াতে মরিয়া সিএনজিচালক ও মালিকরা, বিপদে যাত্রীরা

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. ফরহাদুর রেজা বলেন, একটি শহরের  ধারণ ক্ষমতার উপর ভিত্তি করেই পরিকল্পনার সব সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের কেবলমাত্র মুনাফা লাভের চিন্তা শহরের উন্নয়নের অন্তরায়। ফাপের মান ৩- এর বেশি হলে ওই এলাকায় কী প্রভাব পড়বে বা রাস্তাগুলো কতটুকু কার্যকর থাকবে তা নিয়ে গবেষণা করা উচিত।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন