শনিবার (২৮ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ এক পোস্টে আরাঘচি বলেছেন, ‘মহান ও শক্তিশালী ইরানি জনগণ বিশ্বকে দেখিয়ে দিয়েছে, আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ধ্বংস হওয়া থেকে বাঁচতে ইসরাইলি সরকারের ‘ড্যাডি’র (ট্রাম্প) কাছে ছুটে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় ছিল না।’
তিনি আরও বলেন, ‘যদি ফের তারা ভুল দিকে নিজেদের চালিত করে, ইরান আসল ক্ষমতা উন্মোচন করতে দ্বিধা করবে না। যা অবশ্যই ইরানের শক্তি সম্পর্কে যে কোনো বিভ্রান্তির অবসান ঘটাবে।’
ইরানের পরমাণু অস্ত্র অর্জন ঠেকানোর কথা বলে গত ১৩ জুন দেশটিতে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে ইসরাইল। সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনার পাশাপাশি পারমাণবিক স্থাপনায় মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। এতে ইরানের সামরিক বাহিনীর বেশ কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা ও পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন।
আরও পড়ুন: খামেনির প্রাণ বাঁচালাম, কিন্তু ধন্যবাদটুকুও দিলেন না: ট্রাম্প
আয়াতুল্লাহ আলি খামেনিকেও হত্যার পরিকল্পনা করে ইসরাইল। কিন্তু তাতে সফল হয়নি। হামলা পাল্টা হামলার ১২ দিনের মাথায় ট্রাম্পের ঘোষণার মধ্যদিয়ে গত মঙ্গলবার (২৪ জুন) যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ইসরাইল ও ইরান।
যুদ্ধবিরতির দুদিন পর গত বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) প্রকাশ্যে আসেন এবং জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন আয়াতুল্লাহ আলি খামেনি। ভাষণে ইসরাইলের বিরুদ্ধে ‘বিজয় হয়েছে’ বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, ইরানি জনগণ তাদের ঐক্য প্রদর্শন করেছে-এই বার্তা দিয়েছে যে ‘আমাদের জনগণ এক কণ্ঠস্বর’।
খামেনি আরও বলেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানকে ‘সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ’ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। কিন্তু ‘এই ধরনের কথা মার্কিন প্রেসিডেন্টের মুখে শোভা পায় না।’ তিনি বলেন, ‘ইরানের মতো একটি মহান দেশ ও জাতির জন্য আত্মসমর্পণের কথা বলাই অপমান।’
শুক্রবার (২৭ জুন) ইরানের সর্বোচ্চ নেতার ভাষণের প্রতিক্রিয়া জানান ট্রাম্প। যুদ্ধে বিজয় দাবি করায় ঝাড়েন ক্ষোভ। ট্রুথ সোশ্যালে দীর্ঘ এক এক পোস্টে বলেন, খামেনিকে ‘লজ্জাজনক মৃত্যু’র হাত থেকে রক্ষা করলেও তিনি তাকে ধন্যবাদ জানাননি।
আরও পড়ুন: ইরান-ইসরাইল সংঘাত / সামরিক কমান্ডারসহ নিহতদের জানাজায় মানুষের ঢল
ট্রাম্প দাবি করেন, ইরানে হামলা চালানোর সময় খামেনি কোথায় আশ্রয় নিয়েছিলেন তা তিনি জানতেন। কিন্তু ইসরাইলি ও মার্কিন বাহিনীকে তাকে হত্যা করতে দেননি তিনি। খামেনির যুদ্ধ জয়ের ঘোষণাকে ‘মিথ্যা ও বোকামিপূর্ণ’ আখ্যা দিয়ে তীব্র সমালোচনাও করেন ট্রাম্প।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই খামেনিকে নিয়ে করা ট্রাম্পের মন্তব্যের জবাব দেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি মনেপ্রাণে চুক্তি করতে চান, তাহলে তাকে আয়াতুল্লাহ খামেনির প্রতি অসম্মানজনক ভাষা ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং তার কোটি ভক্তের অনুভূতিতে আঘাত দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।’