ডাকসু নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা শুরু, কোন প্রার্থী কী বললেন?

২ সপ্তাহ আগে
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচারণা মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) থেকে শুরু হয়েছে। প্রচারণার প্রথম দিনই জনসংযোগে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ, ছাত্র পরিষদ ও স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা।

দুপুর সাড়ে ৩টায় ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে মহান একাত্তরের শহীদদের স্মৃতি ফলক ‘স্মৃতি চিরন্তনে’ শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রচার কার্যক্রম শুরু করে। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র বাড়ানোর দাবি জানান ছাত্রদলের মনোনীত ভিপিপ্রার্থী আবিদুল ইসলাম খান।

 

তিনি বলেন, ‘ডাকসু নির্বাচন কমিশন আচরণবিধি শুনিয়েছে, কিন্তু প্রার্থীদের মতামত গ্রহণ করেনি। প্রায় ৪০ হাজার ভোটারের জন্য মাত্র আটটি কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। ডাকসু ও হল সংসদ মিলিয়ে প্রতিজনকে ৪১টি ভোট দিতে হবে, যা সময়সাপেক্ষ। এক ঘণ্টায় একটি বুথে সর্বোচ্চ ৪০-৫০ ভোট দেয়া সম্ভব। যদি ২০টি বুথ থাকে, তবুও দিনে এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ ভোটের বেশি কাস্ট সম্ভব নয়। এ অবস্থায় আটটি ভোটকেন্দ্র দিয়ে কোনোভাবেই সব শিক্ষার্থীর ভোট নিশ্চিত করা যাবে না।’

 

এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ভোটকেন্দ্র না বাড়ালে ২০১৯ সালের মতো আবারও অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের ফেক লাইন তৈরি হতে পারে। ভেতরে ছাত্রলীগ দাঁড়িয়ে ছিল, কিন্তু অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা ঢুকতে পারেননি। এবারও অনাবাসিক শিক্ষার্থীরা যদি দেরিতে আসেন, তবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করা সম্ভব হবে না।

 

জোহরেরর নামাজ শেষে প্রচারণা কার্যক্রম শুরু করে ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীজোট। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি এলাকা থেকে শুরু হয় তাদের প্রচারণা। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীজোটের ভিপি প্রার্থী সাদিক কায়েম।

 

আরও পড়ুন: ডাকসুতে কোন পদে কতজন লড়ছেন?

 

তিনি বলেন, আমরা কেমন বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ করতে চাই, সে রূপরেখা শিক্ষার্থীদের দেয়া উচিত। কিন্তু আমরা যদি প্রোপাগান্ডা করি, ট্যাগিং এবং ফ্রেমিংয়ের রাজনীতি করি, তাহলে শিক্ষার্থীরা তাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন।

 

তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান থেকে একাডেমিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাই আমরা। এখানে রাজনীতির নামে অপরাজনীতির কারণে শিক্ষার্থীদের রাজনীতির প্রতি অনিহা তৈরি হয়।

 

দুপুর একটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের বধ্যভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেন ‘স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য’। এ সময় ভিপিপ্রার্থী উমামা ফাতেমা, জিএস প্রার্থী আল সাদী ভূঁইয়াসহ প্যানেলের অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

 

এ সময় উমামা ফাতেমা বলেন, ডাকসু যেন নিয়মিত এবং অনাড়ম্বরভাবে আয়োজিত হতে পারে, সেটি প্রশাসনকে দেখতে হবে। প্রচার-প্রচারণা এমনভাবে করব, যেন শিক্ষার্থীদের নিয়মিত কার্যক্রমে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে। অনেক প্রার্থী ১০-১৫ দিন আগ থেকেই অলিখিতভাবে প্রচারণা করেছেন। আমরা বারবার বললেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

 

আরও পড়ুন: কালচারাল ফ্যাসিস্টরাই আমাদের ফেস্টুন বিকৃত করেছে: সাদিক কায়েম

 

এদিকে, সকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদনের মধ্য দিয়ে প্রচার কার্যক্রম সূচনা করে বাম সমর্থিত প্রতিরোধ পর্ষদ। এই প্যানেল থেকে ভিপি প্রার্থী শেখ তাসনিম আফরোজ ইমি, জিএস প্রার্থী মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস প্রার্থী মো. জাবির আহমেদ জুবেলের নেতৃত্বে প্যানেলটি শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। এছাড়া গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ প্যানেল জসিম উদ্দিন হল ও ডাকসু ফর চেঞ্জ প্যানেল ভিসি চত্বর থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবর জিয়ারতের মধ্যদিয়ে  নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন সমর্থিত প্যানেল ‘সচেতন শিক্ষার্থী সংসদ’।

 

এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে এজিএস প্রার্থী তাহমীদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক প্রার্থী জহিন ফেরদৌস জামি ও স্বতন্ত্র সদস্য প্রার্থী সরদার নাদিম মাহমুদ শুভ। এসব প্যানেলের বাইরেও স্বতন্ত্রভাবে অনেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন