আর এ মেলার আড়ালে সেদিন থেকেই চলছে লটারির নামে জুয়া বাণিজ্য। মেলাটি মাসব্যাপী চলার কথা রয়েছে।
জানা গেছে, জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানাকে ভুল বুঝিয়ে কোনোরকমে মেলা চালানোর অনুমতি নেয় মেলা কমিটি। আর মেলার অনুমতি নিয়েই আয়োজককারীরা চটকদার পুরস্কারের কথা বলে প্রতিদিন অর্ধশতাধিক যানবাহনে করে গ্রামাঞ্চলে ২০ টাকা করে প্রতিটি লটারির টিকিট বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। যদিও উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন বলছে, লটারির টিকিট বিক্রির বিষয়টি তাদের অজানা।
অন্যদিকে গত (৬ এপ্রিল) ব্যাটারিচালিত বেশ কয়েকটি অটো যোগে পাশের উপজেলা রাণীশংকৈলে লাটারির টিকিট বিক্রি করার সময় থানা পুলিশ তিনটি অটো, লটারির বাক্স ও কয়েকজনকে আটক করে। পরে মেলা কমিটি খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে যায় রাণীশংকৈল থানায়। লটারির টিকিট বিক্রি পুরোপুরি বন্ধ রাখার কথা বলে মুচলেকা দিয়ে আটক ব্যক্তি ও যানবাহন ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। এখানেও পুলিশ প্রশাসনে ধোঁকা দেয় তারা। এত কিছুর পরেও বন্ধ হয়নি অবৈধ লটারি বাণিজ্য।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় হস্তশিল্প মেলার নামে চলছে জুয়া ও অশ্লীল নাচ!
প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পুনরায় প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লুফে নিচ্ছে গ্রামের সহজ সরল মানুষের কাছ থেকে। তবুও যেন নিশ্চুপ জেলা প্রশাসন। কার্যত পদক্ষেপ নেই লটারি বাণিজ্য বন্ধের।
পীরগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা আলী আকবর, শরিফুল ইসলাম, আব্দুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন বলেন, ‘নাম দেয়া হয়েছে হস্ত ও কুটির শিল্প মেলা। কিন্তু এর আড়ালে সাধারণ মানুষের উপার্জিত টাকা লুফে নিচ্ছে। চটকদার পুরস্কারের কথা বলে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন জুয়া বাণিজ্য চললেও অজ্ঞাত কারণে দেখেও যেন দেখছে না। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। শিক্ষার্থীরা লটারির বিক্রি মাইকিংয়ে অতিষ্ঠ। এমনিতে মানুষের আয় রোজগার কম।’
অন্যদিকে ফিলিস্তিনে গণহত্যা হচ্ছে, এ অবস্থায় মেলার নামে উৎসব কতটা যৌক্তিক তা ভাবিয়ে তোলে। এ সময়ে মেলার অনুমতি দেয়াই ঠিক হয়নি অবিলম্বে তা বন্ধের দাবি তুলেন তারা।
এ বিষয়ে পীরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাবুল জানান, মেলার নাম করে লটারি বাণিজ্য হচ্ছে। সেইসঙ্গে প্রবেশ টিকিটের সঙ্গে লটারির টিকিট বিক্রি কোনোভাবেই কাম্য নয়। শুরু থেকেই বলা হয়েছে লটারি কেন? আয়োজক কমিটিকে বলা হয়েছে মেলা চলতে পারে লটারি যেন না চলে। বিরোধিতা করা হয়েছে, শুরু থেকেই তারপরেও লটারি বিক্রি হচ্ছে এটা ঠিক হচ্ছে না। তা বন্ধে আবারও বলা হবে আয়োজক কমিটিকে।
আরও পড়ুন: ঈদ মেলায় অশ্লীল নাচ-গান ও জুয়ার আসর, গ্রেফতার ৩৮
আর পীরগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা রকিবুল হাসান ও থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, মেলা কমিটি অবগত করেছিল মেলার প্রবেশ টিকিটগুলো লটারি করে পুরস্কার দেবে, মেলায় ঘুরতে আসা মানুষকে। আলাদা করে লটারি টিকিট বিক্রি করছে তা অজানা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান উপজেলা প্রশাসনের এই দুই কর্মকর্তা।