ট্রান্সফরমারে আগুন, সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে দাদি-নাতনিসহ ৩ জনের মৃত্যু

২ সপ্তাহ আগে
বান্দরবানে বৃষ্টিতে শর্টসার্কিট হয়ে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে যায়। এ সময় সুইচ বন্ধ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান দাদি ও নাতনিসহ তিনজন।

সোমবার (১৪ জুলাই) সকালে সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের রাংলাই চেয়ারম্যান পাড়া থেকে ওই তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।


এর আগে রোববার (১৩ জুলাই) রাত দেড়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।


মৃতরা হলেন: ওই পাড়ার মৃত পারও ম্রোর স্ত্রী উরকান ম্রো (৭১), তার নাতনি তুমলে ম্রো (১৭) ও মৃত মেনরাও ম্রোর স্ত্রী রিয়েন ম্রো ওরফে রওলেং (৩৫)।


জানা যায়, প্রতিদিনের মত রাতের খাবার খেয়ে একই বিছানায় ঘুমাতে যান উরকান ম্রো ও তার নাতনি তুমলে ম্রো। কিন্তু রোববার রাত ১টার দিকে হঠাৎ করে শর্টসার্কিট হয়ে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে আগুন ধরে যায়। এ সময় সুইচ অফ করতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যান দাদি ও নাতনি। বৈদ্যুতিক ত্রুটির কারণে বান্দরবান সদর উপজেলার সুয়ালক ইউনিয়নের রাংলাই চেয়ারম্যান পাড়ায় বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে পাড়ার প্রতিটি ঘর। এ সময় ইলেকট্রিক বোর্ড ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতিতে শর্ট সার্কিটের কারণে আগুন ধরে যায়। পাড়ার বাসিন্দা রওলেং ম্রো ঘুম থেকে উঠে মেইন সুইচ বন্ধ করতে গেলে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ সময় আগুনে পুড়ে যায় বিভিন্ন ঘরের মিটার ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতি।


আরও পড়ুন: বান্দরবানে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে তিন নারীর মৃত্যু


স্থানীয়দের অভিযোগ বেশকিছু দিন ধরে তাদের পাড়ার ট্রান্সফরমারে সমস্যা দেখা দিচ্ছিল। অনেকবার বলার পরও সেটি ঠিক করা হয়নি। তবে রোববার সন্ধ্যায় বিদ্যুৎ অফিসের ইলেক্ট্রিশিয়ান ট্রান্সফরমার ঠিক করে যাওয়ার পর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তাই এরজন্য বিদ্যুৎ অফিসের গাফিলতিকে দায়ী করছেন স্থানীয়রা।


সিংচ্যা পাড়ার বাসিন্দা রংরাও ম্রো বলেন, ‘বেশ কিছুদিন ধরে আমাদের পাড়ার বিদ্যুতের ট্রান্সফরমারে সমস্যা হয়। কিন্তু বার বার বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের বলা হলেও টাকা না দিলে ঠিক করবে বলে জানান। পরবর্তীতে কয়েকটি পাড়ার লোকজন বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের টাকা দিলে তারা রোববার বিকেলে এসে ট্রান্সফরমারটিতে যেনতেনভাবে কাজ করে চলে যায়। পরে রাত দেড়টার দিকে বিকট শব্দ হয়ে ট্রান্সফরমারটিতে আওয়াজ হয় এবং সঙ্গে সঙ্গে এলাকার সব কয়টি ঘরে ইলেকট্রিক বোর্ডে বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়।


আরও পড়ুন: অটোরিকশা চার্জ দিতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু


এ সময় বোর্ডের সুইচ বন্ধ করতে গেলে একই পরিবারের দাদি, নাতনিসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। আহত হয় আরও ৫ থেকে ৬ জন। তারা বর্তমানে বান্দরবান সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।


এ দিকে প্রাথমিকভাবে বিদ্যুতের শট সার্কিটের কারণে এ মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানান বান্দরবান ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ।


তিনি বলেন, ট্রান্সফরমারের গোলযোগের কারণে পাড়ার প্রত্যেকটি বাড়ি বিদ্যুতায়িত হয়ে যায়। এ এলাকার লোকজন সহজ সরল ও তেমন সচেতন না হওয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একে একে তিনজনই মারা যান, আহত হয় আরও ৬ জন।


উল্লেখ্য, বান্দরবানের দুর্গম পাহাড়ের রাংলাই চেয়ারম্যান পাড়ায় বসবাস করে ২৭টি ম্রো পরিবারের দুই শতাধিক বাসিন্দা।
 

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন