টেস্ট ক্রিকেটকে যদি দুই স্তরে ভাগ করা হয়, তাহলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজসহ র্যাঙ্কিংয়ের নিচের দলগুলো ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ডের মতো র্যাঙ্কিংয়ের ওপরে থাকা দলগুলোর সঙ্গে নির্দিষ্ট একটা সময় পর্যন্ত খেলার সুযোগ পাবে না। সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৭ সাল থেকে এই ব্যবস্থা চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।
আইসিসির পূর্ণ সদস্য হিসেবে বর্তমানে টেস্ট খেলতে পারে মোট ১২টি দেশ। এর মধ্যে ৯টি দেশ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ খেলে। তবে নিচের দিকে থাকা দলগুলোর ম্যাচ খুব একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয় না, আর আর্থিকভাবে লাভজনকও নয়। আর এসব কারণ দেখিয়ে টেস্ট ক্রিকেটে দুটি স্তর চালুর আলোচনা চলছে অনেক দিন ধরেই।
গত জানুয়ারিতে মেয়েদের অ্যাসেজের সময় অস্ট্রেলিয়া (সিএ) ও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) এ বিষয়ে আলোচনা করে। যুক্তরাজ্যের গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টেস্টে দুটি স্তর চালু করতে অস্ট্রেলিয়া বেশ আগ্রহী। তারা চায়, অস্ট্রেলিয়া, ভারত ও ইংল্যান্ড থেকে একে অপরের বিপক্ষে প্রতিন তিন বছরে দুটি করে সিরিজ খেলুক। যা বর্তমানে প্রতি চার বছরে দুটি হয়। তবে এ ধরনের প্রস্তাবে ইসিবি খুব একটা সাড়া দিতে চাইছে না।
আরও পড়ুন: বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় আবেগঘন বার্তা সাকিবের
এবারের আইসিসি বার্ষিক সভাতেও উঠে এসেছে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার দুই স্তর টেস্ট বিষয়ক আলোচনা। সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত চার দিনের সভায় দুই স্তর টেস্টের বিষয়ে একটি সুপারিশ প্রদানের জন্য একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। আট সদস্যের এই কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করবেন আইসিসি নবনিযুক্ত প্রধান নির্বাহী সংযোগ গুপ্ত। অন্যতম সদস্য হিসেবে আছেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী টড গ্রিনবার্গ ও ইসিবির প্রধান নির্বাহী রিচার্ড গোল্ড।
টেস্ট ক্রিকেটে দুই স্তর চালু করতে হলে ১২টি পূর্ণ সদস্যদেশের দুই-তৃতীয়াংশের ভোট দরকার হবে। অর্থাৎ দ্বিতীয় স্তরে নেমে যেতে হবে- এমন সম্ভাবনা থাকা একাধিক দলকে সম্মতি দিতে হবে। সে ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে ঐক্যমতে পৌঁছানো। কোনো দলই দীর্ঘ সময় অবনমন অঞ্চলে থাকতে চাইবে না, টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপকে মানদণ্ড ধরলে একটি দলকে উত্তরণের জন্য দুই বছর অপেক্ষা করতে হবে।
আবার ভারত, অস্ট্রেলিয়ার মতো দলগুলোর বিপক্ষে হোম ম্যাচ আয়োজন করলে যে ধরনের আর্থিক লাভ হয়ে থাকে, দ্বিতীয় স্তরের দলগুলো সে সুযোগ না পেলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ ক্ষেত্রে এই দলগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে হতে পারে।
আরও পড়ুন: নিজেদের কারণেই স্টেডিয়ামে খাবার নেয়ার সুযোগ হারালেন দর্শকরা!
এদিকে আইসিসির বার্ষিক সভায় একটি নতুন টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস লিগ বা বিশ্ব ক্লাব চ্যাম্পিয়নশিপ আয়োজন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে এ নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব তোলা হয়নি।
এর আগে ২০০৮ সালে ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার বোর্ডের উদ্যোগে একটি টি-টোয়েন্টি চ্যাম্পিয়নস লিগ চালু হয়েছিল। তবে সম্প্রচার সংস্থা ইএসপিএন স্টার সম্প্রচার-স্বত্ব ফি দিতে না পারায় ২০১৪ সালে এটি বন্ধ হয়ে যায়। আইসিসি নিজেদের মতো করে একটি টুর্নামেন্ট চালু করতে আগ্রহী।
বোর্ড সভা নিয়ে আইসিসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সহযোগী সদস্য দেশ হিসেবে দুটি নতুন বোর্ড যুক্ত হয়েছে। একটি পূর্ব তিমুর ক্রিকেট ফেডারেশন, আরেকটি জাম্বিয়া ক্রিকেট ইউনিয়ন। বর্তমানে আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ ১১০টি।
]]>