শনিবার (২৪ মে) রাতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (২৫ মে) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ।
পিবিআই জানায়, ২০১৩ সালে পিরোজপুর জেলার মাংস ব্যবসায়ী শহিদুল ইসলাম শিপন ভালোবেসে বিয়ে করেন পটুয়াখালীর তরুণী লাকী আক্তারকে। বিয়ের পর তাদের সংসারে একটি ছেলে একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম হয়। পরে স্ত্রী লাকীকে ও দুই সন্তানকে নিয়ে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার রেলস্টেশন এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন শিপন।
আরও পড়ুন: টিকটক করার জন্য ফটোগ্রাফারকে খুন করে ক্যামেরা ছিনতাই, রহস্য উদঘাটন
গত বেশ কিছুদিন ধরে লাকী মোবাইল ফোনের টিকটকে আসক্ত হয়ে স্বামী সন্তান ও সাংসারিক কাজে অমনোযোগি হয়ে পড়েন। স্বামীর প্রতিও উদাসীন হয়ে পড়লে তাদের দাম্পত্য সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো।
গত ১৯ মে সন্ধ্যায় দুজনের মধ্যে আবারও ঝগড়া হলে লাকীকে শারীরিক নির্যাতনের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বামী শিপন। পরে নাবালক দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যান তিনি। হত্যাকাণ্ডের পরদিন ২০ মে সকালে লাকীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় লাকীর মুখমণ্ডল ও গলায় আঘাতের ক্ষতচিহ্নও পাওয়া যায়।
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার মো. মোস্তফা কামাল রাশেদ জানান, এ ঘটনায় লাকীর স্বামী শহীদুল ইসলাম শিপনকে আসামি করে গত ২৪ মে ফতুল্লা মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন নিহতের বড় বোন সানিয়া আক্তার। থানা পুলিশের পাশাপাশি আসামিকে গ্রেফতারের তৎপরতা শুরু করে জেলা পিবিআই। পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে আসামির অবস্থান নিশ্চিত হয়ে শনিবার রাত সাড়ে ১১টায় রাজধানীর সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালানো হয়। গ্রামের বাড়িতে পালিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে লঞ্চে ওঠার সময় শিপনকে গ্রেফতার করে পিবিআই এর আভিযানিক দল।
আরও পড়ুন: ‘জুয়ার বিজ্ঞাপন প্রচার’, কারাগারে টিকটকার তোহা
পিবিআই জেলা পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি শহীদুল ইসলাম ওরফে কসাই শিপন তার স্ত্রী লাকী আক্তারকে টিকটকের আসক্তির ক্ষোভ থেকেই হত্যা করেছেন বলে স্বীকার করেছেন। আসামি শিপনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
নিহত লাকী আক্তারের ছেলে সগিরের বয়স ১২ ও মেয়ে সামান্তার বয়স ৭ বছর। তারা দুজনই স্থানীয় মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে।