টানা বৃষ্টিতে কক্সবাজারে পানিবন্দি ৭০ গ্রামের ৬০ হাজার মানুষ

৪ সপ্তাহ আগে
টানা চার দিনের মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার অন্তত ৭০টি গ্রামে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। এতে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের সূত্রে জানা গেছে, উখিয়া উপজেলার ২০টি এবং টেকনাফ উপজেলার প্রায় ৫০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকায় নিচু ঘরবাড়ি, কাঁচা রাস্তাঘাট এবং সবজিক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে গেছে।

 

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. আব্দুল হান্নান জানান, সোমবার (৭ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ৩০ ঘণ্টায় ২২৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এর মধ্যে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ১৪৬ মিলিমিটার এবং সকাল ৬টা থেকে ১২টা পর্যন্ত আরও ৮০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই বৃষ্টিপাত আগামী কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

টেকনাফের বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ করে হ্নীলা, বাহারছড়া, হোয়াইক্যং, টেকনাফ সদর ও পৌরসভার অসংখ্য গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে কয়েক হাজার পরিবার ঘরবাড়ি ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। টেকনাফ পৌর এলাকার কয়েকটি ওয়ার্ডে পানিতে তলিয়ে গেছে বাড়িঘর, স্কুল-কলেজসহ নানা স্থাপনা।

 

এদিকে, উখিয়ায়ও ক্ষয়ক্ষতি কম নয়। টানা বৃষ্টির ফলে উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় শুধু ঘরবাড়ি নয়, পানের বরজ, বীজতলা ও সবজিক্ষেত ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে নীচু এলাকাগুলো দ্রুত প্লাবিত হয়ে পড়ে। পাশাপাশি কয়েকটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে।

 

আরও পড়ুন: সাগরে একের পর এক সতর্ক সংকেত, দিশেহারা লাখো জেলে

 

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌধুরী নিজে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি মোকাবেলায় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে এবং পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন পরিষ্কারের কাজ চলছে।

 

স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তারা জানান, টানা বর্ষণে আমনের বীজতলা নষ্ট হয়ে গেছে। জলাবদ্ধতায় মাছভর্তি পুকুর পানিতে ডুবে গেছে, অনেক জায়গায় মাছ ভেসে গেছে।

 

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ এহেসান উদ্দিন জানান, ভারী বর্ষণের কারণে কিছু গ্রামে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে এবং ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়ি এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নেয়ার কাজ চলছে।

 

এদিকে থাইংখালী-মোছারখোলা সড়কে একটি গাছ পড়ে বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এ কারণে যোগাযোগ ব্যবস্থাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ কাউসার হোসেন জানান, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার নামের তালিকা তৈরি করার জন্য ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের বলা হয়েছে।

 

এছাড়া কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ৩টি ক্যাম্পে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল উদ্দিন।

]]>
সম্পূর্ণ পড়ুন